বাংলার ভোর প্রতিবেদক
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে যশোরে ‘চব্বিশের গণআন্দোলন ও আজকের মূল্যায়ন’ শীর্ষক এক বিশেষ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বিকালে শহরের অনুশীলন পাঠাগারে বিপ্লবী গবেষণা সেল এই সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুমাইয়া শিকদার ইলা। মূল প্রবন্ধে ‘চব্বিশের আন্দোলনকে’ বৈষম্যের বিরুদ্ধে এক ঐতিহাসিক জাতীয় প্রতিবাদ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। তিনি বলেন, এই আন্দোলনের পর জনগণের প্রত্যাশা ছিল একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্রব্যবস্থার সূচনা। কিন্তু বাস্তবে সংস্কারের নামে ক্ষমতার পুনর্বিন্যাস চলছে এবং সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

সুমাইয়া শিকদার তার প্রবন্ধে আরও উল্লেখ করেন, আন্দোলনের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো ‘বৈষম্য’ শব্দটি এখন রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। তবে তা বাস্তবে রূপ পায়নি। কৃষক ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না। শ্রমিক পাচ্ছে না ন্যায্য মজুরি। এমনকি শিক্ষার্থীরা রয়েছে ভবিষ্যৎহীনতার মধ্যে। এই ব্যবস্থা বদলের জন্য কোনো সংস্কার কমিশনও গঠন করা হয়নি।

বামনেতা খবির শিকদারের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন, ছাত্র প্রতিনিধি সুরাইয়া শিকদার এশা,কামাল উদ্দিন রানা, সামিউল আজিম, রায়হান আবির, রাহুল প্রমুখ। পুরো অনুষ্টান সঞ্চালনা করেন শ্যামল শর্মা।

সেমিনারে বক্তারা অভিমত প্রকাশ করেন যে, বর্তমান রাজনৈতিক সংস্কার কার্যক্রম মূলত ‘নতুন বোতলে পুরনো মদের পুনরাবৃত্তি’। দলীয় চরিত্র, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির সংস্কৃতি থেকে বের হতে না পারলে আসল পরিবর্তন সম্ভব নয়। শুধু সরকারের পতন নয়, প্রয়োজন একটি শোষণমুক্ত রাষ্ট্রব্যবস্থা যেখানে রাষ্ট্র থাকবে জনগণের হাতে এবং অর্থনীতি পরিচালিত হবে জনকল্যাণের লক্ষ্যে। বক্তারা সেমিনারে কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগণের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আরেকটি বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতির আহ্বান জানান।

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Exit mobile version