প্রতীক চৌধুরী :
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও বর্ণিল আয়োজনে যশোরে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় যশোর ঈদগাহ ময়দানে প্রধান জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর সকাল সোয়া ৮টায় যশোর জেলা মডেল মসজিদে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। এতে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও আলাদা জায়গায় একই সঙ্গে জামায়াতে ঈদের নামাজ আদায় করেন। নারীরা জামায়াতে ঈদের নামাজ আদায় করতে পেরে খুশি। অনেকেই বলেছেন, মডেল মসজিদেই প্রথম তারা জামায়াতের ঈদের নামাজ আদায় করলেন।
সকাল ৮টায় যশোর ঈদগা ময়দানে প্রধান জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন কালেক্টরেট মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মুফতি ইয়াসিন আলম। দ্বিতীয় জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৯টায়। এতে হাজারো মুসল্লি অংশ গ্রহণ করেন।
অপরদিকে, সকাল সোয়া ৮টা ও সকাল সোয়া ৯টায় যশোর জেলা মডেল মসজিদে দুটি জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। এতে পৃথক জায়গায় একই সঙ্গে নারী ও পুরুষ মুসল্লিরা ঈদের জামায়াতে অংশ নেন। জামায়াতের ঈদের নামাজ আদায় করেন অনেক নারী। মডেল মসজিদের তৃতীয়তলায় নারীদের জন্য পৃথক নামাজের ব্যবস্থা করা হয়। অনেকেই জীবনে প্রথম জামায়াতে ঈদের নামাজ আদায় করতে পেরে খুশি।
উপশহর এলাকার বাসিন্দা জেসমিন আরা বলেন, যশোরে নারীদের জামায়াতে ঈদের নামাজ পড়ার সুযোগ ছিল না। ছোট বেলায় শুনেছি মেয়েরা ঢাকায় মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করে। যশোরে মডেল মসজিদ চালুর পর থেকে নারীরা নামাজের সুযোগ পাচ্ছে। এখানে ঈদের নামাজ আদায় করতে পেরে খুবই খুশি।
শাহিদা ইয়াসমিন নামে আরেক মুসল্লি বলেন, খতম তারাবি ও ঈদের নামাজ এই মসজিদে আদায় করেছি। এজন্য নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করছি। আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া আদায় করি।’
সুমনা ফেরদৌস নামে আরেক নারী বলেন, আমরা পরিকল্পনা করেই বাচ্চাদের নিয়ে মসজিদে নামাজ আদায় করতে এসেছি। বাচ্চাদেরও অভিজ্ঞতা হলো। নারীদের জন্যও মসজিদে নামাজের ব্যবস্থা আছে, এটা খুবই ভাল উদ্যোগ। বিষয়টি আরো জানাজানি হলে নারীদের উপস্থিতি বাড়বে। সুযোগ পেলে মেয়েরাও বের হতে চায়, মেয়েরাও মসজিদে নামাজ আদায় করতে চায়।’
যশোর জেলা মডেল মসজিদের খতিব ও ইমাম মাওলানা মহিউদ্দিন বলেন, আমাদের মসজিদে দুটি ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। শুধু ঈদের নামাজ নয় পাঁচওয়াক্ত, জুম্মার নামাজ ও তারাবি পড়ারও সুযোগ রয়েছে। ঈদের নামাজে নারীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মত ছিল। যশোরবাসীর জন্য এটা একটা দৃষ্টান্ত। ’
ইসলামী ফাউন্ডেশন যশোরের উপপরিচালক বিল্লাল বিন কাশেম বলেন, এবার জেলা প্রশাসন, ইসলামী ফাউন্ডেশন ও জেলা মডেল মসজিদের উদ্যোগে চারটি ঈদের জামায়াতের আয়োজন করা হয়। এরমধ্যে ঈদগাহ ময়দানে দুটি ও জেলা মডেল মসজিদে দুটি জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা মডেল মসজিদে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও একই সময়ে পৃথক জায়গায় ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। শুধু ঈদের নামাজ নয়, নারীদের জন্য ওয়াক্তের নামাজ ও তারাবি নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। পুরুষের পাশাপাশি নারীদের নামাজ আদায়ের বিষয়টি ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে।
যশোরের জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদার বলেন, এক মাস সিয়াম সাধনার পর আজ আমরা পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছি। যশোরবাসীর পক্ষ থেকে সবাইকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।