বাংলার ভোর ডেস্ক
তীব্র শীতে নাকাল যশোরের জনজীবন। টানা দুই দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পর রোববার তাপমাত্রা কিছু বৃদ্ধি পেলেও সারাদিন যশোরে সূর্যের দেখা মেলেনি। সোমবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। দিনভর ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় জবুথবু অবস্থা। সকালে মেঘলা আকাশে উঁকি দেয়নি সূর্য। চারদিন ধরে শৈত্যপ্রবাহে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষ।
যশোর বিমানবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। রোববার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে শনিবার ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও শুক্রবার ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। যা সারাদেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল। সূর্যের দেখা না যাওয়ায় দুই দিনের চেয়ে বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে বলে শ্রমজীবী ও খেটে মানুষেরা দাবি করেছেন। তীব্র শীতে দিনমজুর, কৃষি শ্রমিকসহ খেটে খাওয়া মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।
ভোর থেকেই জেলার আকাশ ছিল কুয়াশাচ্ছন্ন ও মেঘে ঢাকা। প্রচণ্ড ঠান্ডায় বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ ও শ্রমজীবীরা। বিশেষ করে ভোর থেকে কাজে বের হওয়া দিনমজুর, ভ্যানচালক ও শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন। প্রচন্ড শীতের কারণে মানুষজনের স্বাভাবিক কর্মকান্ড ব্যহত হচ্ছে। মোটা জ্যাকেট, মাফলারে ঢেকে মানুষজনকে জুবুথুবু হয়ে পথ চলতে দেখা যায়। হাড় কাঁপানো শীতে ঘর থেকে বের হননি অনেকে। তবে ঘর থেকে বের হয়েও কাজ মিলছে না শ্রমজীবী মানুষের। যদিও শহরে মানুষের চলাচল অনেকটা কম দেখা গেছে।
শহরের দড়াটানায় আমিরুল নামে একজন রিকশাচালক জানান, ‘কুয়াশা আর উত্তরের বাতাশের কারণে শহরে লোকজন কম, যাত্রীও মিলছে না। শীতের জন্য রিকশায় কেউ উঠতে চায় না। তবুও জীবিকার তাগিদে প্রতিদিন ঘর ছেড়ে বের হতে হচ্ছে।’ এদিকে ফুটপাতের দোকানগুলোতে গরম কাপড়ের বেচাকেনা বেড়েছে। শীতের তীব্রতা বাড়ায় হাসপাতালেও বেড়েছে রোগীদের চাপ। ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বয়স্করা।
জেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে জেলায় রবি ফসল, বোরো ধানের বিজতলা এবং মৌ খামারিদের মধু সংগ্রহে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। জেলার আট উপজেলার মাঠে সরিষা, ভুট্টা, পেঁয়াজ, রসুনসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফসল এবং বোরো ধানের বিজতলা রয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। কৃষিকাজ ব্যাহত হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে কৃষকদের ফসল সুরক্ষায় আগাম সতর্কতা ও করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত ফসলের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন, যাতে কোনো ক্ষতি হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া যায়।’
