বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে ধীরে ধীরে তাপমাত্রার পারদ কমতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে আসে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। যা এ মৌসুমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। বাতাসের আদ্রতা ছিলো ৯৫ শতাংশ। ফলে শরীরে ঠান্ডার অনুভূতি আরও তীব্রভাবে অনুভূত হয়েছে। হঠাৎ করেই শীত জেঁকে বসায় বড় প্রভাব পড়েছে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায়। বিশেষ করে রিকশাচালক ও নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। যশোর বিমানবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন আবহাওয়া বলছে, প্রতিদিনই যশোরে কমছে তাপমাত্রার পারদ। গত মঙ্গলবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার ছিলো ১৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর বুধবার কমে সেই পারদ দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৫।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, এবার প্রকৃতিতে ঠিক সময়ে শীত নামার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। মানে পৌষ মাস এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রার পারদ নামতে শুরু করেছে। স্থানীয়রা জানান, ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত ঠাণ্ডার আমেজ বেশি থাকলেও রোদ উঠলেই চারপাশ ধীরে ধীরে উষ্ণ হয়। তবে দিনের বেলায় রোদের তেজ থাকলেও বিকেল গড়ালেই ঠাণ্ডা জেঁকে বসছে।
আবহাওয়ার এই বিরূপ প্রভাব জেলার জনস্বাস্থ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। জেলার আশপাশের হাসপাতালগুলোতে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনজনিত অ্যালার্জিতে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে।
চিকিৎসকরা বলছেন, দিন-রাতের তাপমাত্রার এই বড় পার্থক্য শরীরের ওপর চাপ ফেলে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার এবং উষ্ণ কাপড় ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
♦ গরম কাপড়ের দোকানে ক্রেতার ভিড়
গত কয়েকদিনের জেঁকে বসার শীত থেকে পরিত্রাণ পেতে গরম কাপড়ের দোকান গুলোতে ভিড় জমাচ্ছে ক্রেতা সাধারণ।
গরম পোশাকের মার্কেট বলতে যশোর শহরের মুজিব সড়কের ফুটপাতের দোকান, জেলা পরিষদের পুরনো কাপড়ের মার্কেট, কালেক্টরেট মার্কেটে শীতের পোশাক বিক্রি শুরু হয়েছে বেশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের মুজিব সড়কের ফুটপাতের দোকান, জেলা পরিষদের পুরাতন কাপড়ের মার্কেটের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
এদিন শহরের ফুটপাত, জেলা পরিষদ পুরাতন কাপড়েরর মার্কেটে সকাল থেকে ক্রেতাদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। তবে বিকেলে ছিল ক্রেতাদের বেশি ভিড়। তারা বিভিন্ন দোকান ঘুরে নিজেদের ও পরিবারের সদস্যদের জন্য পছন্দ মতো শীতের পোশাক কেনাকাট করেছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দোকানে সাজিয়ে রাখা হয়েছে সোয়েটার, হুডি, টুপিওয়ালাগেঞ্জি, জ্যাকেট, জগাজ পায়জামা, ফুলহাতা গেঞ্জিসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাক। সোয়েটার ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা, হুডি ২৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা, টুপিওয়ালাগেঞ্জি ১৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা, জ্যাকেট ৩০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা, জগাজ পায়জামা ১০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা, ফুলহাতা গেঞ্জি ৬০ টাকা ১০০ টাকা দারে বিক্রি হচ্ছে।
মুজিব সড়কের ফটপাতের দোকানদার এমদাদুল হক জানান, বাচ্চাদের হুডি, পায়জামা ও ফুলহাতা গেঞ্জি বেশি বিক্রি হচ্ছে।
বেশি শীত অনুভূত হওয়ার কারনে শীত পোশাক বেচাকেনা শুরু হয়েছে। বিক্রিও খারাপ হচ্ছে না। একই কথা জানান সিয়াম নামে আরেক দোকানদার। ক্রেতাদের নজর কাড়তে বিভিন্ন শীতে পোষাক সাজিয়ে রেখেছে দোকানদাররা। জেলা পরিষদ মার্কেটের গিয়ে দেখা গেছে ক্রেতাদের বেশ ভিড় ছিল। এ মার্কেটের ওয়ান কালেকশনের সত্বাধিকারী কামরুল ইসলাম জানান, এখন বেশি শীত অনুভূত হওয়ার কারণে বাচ্চাদের সোয়েটার, জ্যাকেট, হুডি বেশি বিক্রি হচ্ছে। বড়দের পোশাক তেমন বিক্রি হচ্ছে না। বাজারে শীতের কাপড় কিনতে আসেন সায়েরা খাতুন নামে এক নারী। তিনি বলেন, ‘শীত বেশি পড়ছে। আমার মেয়ের জন্য শীতের পোশাক কিনতে এসেছি। মেয়ের জন্য একটি সোয়েটার ও টুপি কিনেছি।’

