বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে গত তিনদিন ধরে চলছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। দিনের বেলায় এমনকি গভীর রাতেও ঘন্টার পর ঘন্টা থাকছেনা বিদ্যুৎ। এতে প্রচন্ড তাপদাহে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। গত এক মাস ধরে তীব্র গরমে কাহিল হয়ে পড়েছে জনজীবন। এসময় তাপমাত্রা ছিল ৩৮-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ছিল। দিন-রাতে সমানতালে বিদ্যুত থাকছেনা কমপক্ষে ৫-৬ ঘন্টা। এতে করে আইপিএস ও চার্জার ফ্যানের কদর বেড়েছে। শুধু শহরে নয়, পল্লী বিদ্যুতের অবস্থা আরও খারাপ। সেখানে ১১-১২ ঘন্টা বিদ্যুত থাকছেনা।
যশোর ওজোপাডিকো-১ এর গ্রাহক চাহিদা রয়েছে ৭০ মেগাওয়াট। সেখানে সরবরাহ পেয়েছে ৪৮-৫০ মেগাওয়াট। ঘাটতি থাকছে ২০-২২ মেগাওয়াট বিদ্যুত। যশোর পল্লী বিদ্যুৎ ১ ও ২ এর চাহিদা রয়েছে ২৩২ মেগাওয়ার্ট, সেখানে সরবরাহ পাচ্ছে ১৪০-১৪১ মেগাওয়াট। চাহিদা ও সরবরাহের ঘাটতি সমন্বয় করতে নিয়মিত লোডশেডিং করতে হচ্ছে ওজোপাডিকোর ও পল্লী বিদ্যুৎকে। গত এক মাস ধরে যশোরে তাপপ্রবাহের কারণে গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ। এতে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে। তাই গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে লোডশেডিং। ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ।
শহরের বকচর এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার আলম জানান, গত এক মাস ধরে অসহনীয় গরম পড়ছে। এরমধ্যে চলছে লোডশেডিং। একবার বিদ্যুত গেলে কমপক্ষে এক ঘন্টা পর আসছে। অনেক সময় দেড় ঘন্টও থাকছেনা। তীব্র গরমে সব বয়সী মানুষের অবস্থা কাহিল। বেজপাড়া মেইন রোডের রইচ উদ্দিন বলেন, আমরা অগ্রিম টাকা পরিশোধ করেও চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুত পাচ্ছিনা। দিন-রাত সমানতালে বিদ্যুত থাকছেনা। মঙ্গলবার গভীর রাতে দুইবার এক ঘন্টা করে বিদ্যুৎ ছিলনা। প্রচন্ড গরমে ফ্যান ছাড়া বাঁচা যাচ্ছেনা। আবার বিদ্যুতের বিল আসছে অস্বাভাবিক।
ঝিকরগাছা উপজেলার মাটিকুমড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফা জানান, আমাদের গ্রামে একবার বিদ্যুৎ গেলে আর আসছেনা। বিশেষ করে রাতে ঘুমাতে পারছিনা। দিন ও রাত মিলিয়ে কমপক্ষে ১১-১২ ঘন্টা বিদ্যুত থাকছেনা। গরমে জীবন চলে যাবার মতো অবস্থা।
এ ব্যাপারে ওজোপাডিকো যশোর ১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন জানান, আমাদের চাহিদা রয়েছে ৭০ মেগাওয়াট, সরবরাহ পাচ্ছি ৪৮-৫০ মেগাওয়াট। ঘাটতি থাকছে ১৮-২০ মেগাওয়াট। জেনারেশন না পাবার কারণে ঘাটতি সৃষ্টি হচ্ছে। যেকারণে লোডশেডিং বাড়ছে।
তিনি বলেন, গত তিন ধরে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ কম পাবার কারণে কমপক্ষে ৫ ঘন্টা লোডশেডিং করা হচ্ছে। আর রাতে চাহিদা বেড়ে গেলেও সরবরাহ কম পাওয়া যায়।
ওজোপাডিকো-২ নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম মাহমুদ জানান, আমাদের গ্রাহক রয়েছে প্রায় ৬০ হাজার। বুধবার বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৩৫ মেগাওয়ার্ট। সরবরাহ পেয়েছি ২০ মেগাওয়াট।
যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর উপপরিচালক দেবাশিষ ভট্টাচার্য্য জানান, আমাদের ১ ও ২ এর আওতায় বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ২৩২ মেগাওয়ার্ট, কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে ১৪১ মেগাওয়াট। যেকারণে লোডশেডিং বেশি হচ্ছে। বিশেষ করে আমাদের রাতে চাহিদা বেড়ে যায়। তিনি বলেন, বৃষ্টি না হলে বিদ্যুতের চাহিদা কমবেনা। তাপমাত্রা কমে গেলে বিদ্যুতের চাহিদা কমে আসবে।