বাংলার ভোর প্রতিবেদক
চৈত্র বৈশাখের রেকর্ডভাঙ্গা তীব্র তাপপ্রবাহের মাঝে যশোরে অবশেষে বৃষ্টির দেখা মিলেছে। মৌসুমের প্রথম বৃষ্টিতে জনজীবনে স্বস্তি নেমে এসেছে। সোমবার বিকেলে সাড়ে ৫টার পর যশোরের বিভিন্ন এলাকায় হালকা বাতাসসহ বৃষ্টি হয়। এদিন রাত ৯টা পর্যন্ত জেলায় ২৫ মিলি মিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এতে শীতল অনুভব হচ্ছে কিছুটা।
গত ১১ এপ্রিলের পর থেকে যশোরের উপর দিয়ে তীব্র দাবদাহ বয়ে যাচ্ছিল। যশোরে ৫২ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রচণ্ড এ দাবদাহে ওষ্ঠাগত হয়ে পড়ে মানুষের জীবন। সকলে অপেক্ষায় ছিল এক পশলা বৃষ্টির জন্য। অবশেষে সোমবার বিকেল থেকেই যশোরের আকাশে কালো মেঘ ছেয়ে যায়। এরপর শুরু হয় হালকা ঝড়ো বাতাস। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে শুরু হয় কাক্সিক্ষত বৃষ্টি। তবে সে বৃষ্টি বেশিক্ষণ স্থায়ি না হলেও স্বস্তি ফেরায় জনজীবনে। শীতলতা নেমে আসে সর্বত্র। মানুষ এ বৃষ্টি উপভোগ করেছেন। এই ঝড়-বৃষ্টিতে তেমন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে সাময়িক ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
দীর্ঘ তাপদাহের পর বৃষ্টিতে ভেজা আবু সাঈদ বলেন, তাপপ্রবাহের পর আজ যশোরে বৃষ্টি হচ্ছে। অনেক দিন পর যশোরের আকাশে ঠান্ডা বাতাস বইছে। এই বৃষ্টিতে ভিজে খুব ভালো লাগছে।
খড়কি এলাকার শিক্ষার্থী সেলিম হোসেন বলেন, ‘অনেক দিন পর যশোরে বৃষ্টি হওয়ায় মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছ। বৃষ্টি ও ঠান্ডা হওয়া মনকে অনেক সতেজ করে তুলেছে।’ নজরুল ইসলাম নামে এক চাকুরিজীবী বলেন, ‘যশোর চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকে যশোরে বৃষ্টি হচ্ছে এটা আল্লাহর রহমত। বৃষ্টিতে ভিজতেছি অনেক ভালো লাগছে।’
যশোর বিমান বাহিনীর আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য মতে, সোমবার বিকেলে ৩৫ কিলোমিটার গতি বেগে বাতাসে বৃষ্টি হয়েছে। এদিন যশোরে দীনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টিপাতের পর তাপমাত্রা নেমে দাঁড়ায় ২০ থেকে ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে, ঝড় ও বৃষ্টিতে কৃষকেরা উপকৃত হলেন বলে জানিয়েছেন যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. সুশান্ত কুমার তরফদার। তিনি বলেন, ‘ যে বৃষ্টি হয়েছে, কৃষকদের ক্ষতির কোন কারণ দেখছি না। চলতি মৌসুমে পাট, তিল এবং সবজির জন্য উপকার হবে। তিব্র তাপপ্রবাহ চলছিলো সেটা জনমনের সঙ্গে কৃষকদেরও স্বত্বি ফেল।
তিনি জানান, জেলায় ৭৫ ভাগ বোরো মৌসুমের ধান কাটা হয়েছে। আর ২৫ ভাগ কাটছে ১০ দিন লাগতে পারে। আর যদি ভারিবৃষ্টিপাত না হয়; তাহলে কৃষকরা ক্ষতির মুখোমুখি হতে পারবে না।’