বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে সরকারি হাসপাতালে জলাতঙ্ক টিকার সংকট দেখা দিয়েছে। বিনামূল্যের এ টিকা না থাকায় বাধ্য হয়েই বাইরের ফার্মেসি থেকে বেশি দামে কিনে টিকা নিচ্ছেন রোগীরা। রোগীরা এ সংকট দীর্ঘদিনের দাবি করলেও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এক মাস ধরে চলছে এ সমস্যা। চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে, আগামী সপ্তাহেই সংকটের সমাধান হবে।
জানা যায়, যশোর শহরসহ জেলায় পোষা প্রাণী ও বেওয়ারিশ কুকুরের আক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় জলাতঙ্ক ভ্যাকসিনের চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী ভ্যাকসিন না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছে সেবা দেয়া একমাত্র সরকারি কেন্দ্র যশোর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল থেকে ভ্যাকসিন না পেয়ে বাইরে থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে আক্রান্তদের।
হাসপাতালের জলাতঙ্কের সেবা নিতে আসা রোগীরা জানান, জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন নেয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন তারা। অনেককে টিকা দিচ্ছেন কর্তব্যরত সেবিকা। কিন্তু সেবাটি বিনামূল্যে পাওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। রোগীদের দাবি, বাইরের ফার্মেসি থেকে টিকা সংগ্রহ করে এনে দিলেই তা পুশ করে দেয়া হচ্ছে।
সাব্বির জামান, শাহ আলম ও সালেহা বেগমসহ কয়েকজন রোগী জানান, প্রতিদিন শতাধিক রোগী এ সেবা নিতে এসে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরেই সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যের ভ্যাকসিনটি পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বাধ্য হয়ে তারা বাইরে থেকে কিনে এনে টিকা নিচ্ছেন। জরুরি ও ব্যয়বহুল এই টিকাটি দ্রুত সরবরাহের দাবি জানান তারা।
অবশ্য কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্স রিনা সরকার জানান, ১৫ অক্টোবর থেকে ভ্যাকসিনের সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এর আগে স্বাভাবিক ছিল। সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। ভ্যাকসিন চলে আসলে আবারো বিনামূল্যে তা দেয়া হবে। মানুষের আর্থিক বিষয়টি চিন্তা করে একটি ভ্যাকসিন চারজনকে দেয়া হচ্ছে। এতে তারা চার ভাগের একভাগ দাম দিয়ে ভ্যাকসিনটি নিতে পারছেন। এ ছাড়া বেশি ক্ষত হলে আরআইজি টিকা দেয়া হয়। এ ভ্যাকসিনের সংকট নেই। তিনি আরও জানান, প্রতিদিন ৮০ থেকে ১০০ রোগী আসেন হাসপাতালে। বেশিরভাগ রোগী বিড়ালের কামড়ের। মানুষ বিড়াল বেশি পোষায় রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।
এ দিকে হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদের দাবি, জরুরি এ টিকাটির সরবরাহ পেতে চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহেই টিকা চলে আসবে এবং সংকটের সমাধান হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্য মতে, মাসে প্রায় আড়াই হাজার রোগী জলাতঙ্ক রোগের চিকিৎসা নিতে আসেন। এর বিপরীতে প্রতি মাসে ২৫০ ভায়াল ভ্যাকসিন পাওয়া যায়, যা দিয়ে এক হাজার রোগীর সেবা দেয়া সম্ভব হয়।