বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে এ বছর ৬৫২ মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব হচ্ছে। বর্ণিল উৎসবের আয়োজন চলছে মণ্ডপে মণ্ডপে। উৎসব আনন্দে মাতোয়ার হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠানের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা বলয়। নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় থাকলেও প্রশাসনের তৎপরতায় সন্তুষ্ট পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা।
শারদীয় দুর্গাপূজার সার্বিক আয়োজন সম্পর্কে অবহিত করতে সংবাদ সম্মেলন করেছে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ। মঙ্গলবার দুপুরে শহরের লালদীঘি পাড়ে সংগঠন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন হয়। এদিকে, বিকেলে দুর্গাপূজা উপলক্ষে একটি ‘সম্প্রীতি শোভাযাত্রা’ হয়েছে। সংগঠন কার্যালয়ের সামনে থেকে শোভাযাত্রাটি বের হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার ঘোষ জানান, এ বছর জেলায় ৬৫২টি মন্দির ও মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ১৫৭টি, শার্শায় ২৮টি, ঝিকরগাছায় ৪৮টি, চৌগাছায় ৩৬টি, কেশবপুরে ৯২টি, মণিরামপুরে ৯৩টি, অভয়নগরে ১১৫টি ও বাঘারপাড়ায় ৮৩টি মন্দির ও মণ্ডপে পূজা হবে। গত বছর জেলায় ৭১১টি মন্দির ও মণ্ডপে পূজা হয়েছিল।
বাংলাদেশে পূজা উদযাপন পরিষদ যশোর জেলা শাখার সভাপতি দীপংকর দাস রতন, তিন কারণে এবার পূজার মন্দির ও মণ্ডপের সংখ্যা কমেছে। জলাবদ্ধতা, আর্থিক সংকট ও হঠাৎ রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে সৃষ্ট অনাকাঙ্খিত ঘটনার জেরে নিরাপত্তার অভাবে অনেক জায়গায় পূজার আয়োজন নেই।
তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে যৌথভাবে পূজা উদযাপন পরিষদ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। লালদিঘির পাড় হরিসভা মন্দিরে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সেখান থেকে প্রতিটি মন্দির ও ম-পের কার্যক্রম সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হবে। এ ছাড়া বরাবরের মতো পৌরসভার ব্যবস্থাপনায় লালদিঘিতে প্রতিমা নিরঞ্জনের ব্যবস্থা থাকছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে পূজা উদযাপন পরিষদ যশোর জেলা শাখার সভাপতি দীপংকর দাস রতন, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট প্রশান্ত দেবনাথ, সাংস্কৃতি সম্পাদক অঞ্জন সাহা, প্রচার সম্পাদক অর্চনা অধিকারী, নির্বাহি সদস্য কার্তিক ভৌমিক, সুকুমার চক্রবর্তী, গৌরব ঘোষ, পৌর কমিটির সাধারণ সম্পাদক উৎপল ঘোষ।
এদিকে, শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে পূজা উদযাপন পরিষদ যশোরের আয়োজনে শান্তি ও সম্প্রীতি শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে শহরের লালদীঘি পাড়স্থ পরিষদ কার্যালয় চত্বর থেকে এই শোভাযাত্রাটি বের হয় এবং শহর প্রদক্ষিণশেষে একই স্থানে এসে শেষ হয়। প্রশাসন সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এই শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। শোভাযাত্রা শেষে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপঙ্কর দাস রতন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার ঘোষ।
এতে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কমলেশ মজুমদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সাবেরুল হক সাবু, যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, জেলা জামায়াতে ইসলামের আমির গোলাম রসূল, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবু মুর্তজা ছোট, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, সাবেক সভাপতি ও যশোর সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি একরাম উদ দ্দৌলা, লোকসমাজ পত্রিকার প্রকাশক সান্তনু ইসলাম সুমিত, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান বুলু, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হারুন অর রশিদ, যশোর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ শাহীন ইকবাল, সহসভাপতি সাজ্জাদ গনি খান রিমন, বাঁচতে শেখার নির্বাহী পরিচালক অ্যাঞ্জেলা গোমেজ, জয়তী সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক অর্চনা বিশ্বাস, বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ভিটু, সিপিবি নেতা এলাহদাদ খান, পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি বাণী ব্রত ঘোষ মনা, অ্যাডভোকেট প্রশান্ত দেবনাথ, জয়ন্ত পোদ্দার, অর্চনা অধিকারী, অঞ্জন সাহা প্রমুখ।