বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর জেলা কালেক্টরেট ভবনের অমিত্রাক্ষর সম্মেলন কক্ষে রোববার সকালে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্কট, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ইন্টারনেট সংযোগে অচলাবস্থা এবং শহরের সড়কের বেহাল দশা ও কসাইখানার অভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

সভায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রতি মাসে এক থেকে দেড়শো রোগী কুকুর বা বেড়ালে কামড়ানোর চিকিৎসা নিতে আসছেন। এই বিপুল সংখ্যক রোগীর জন্য প্রয়োজনীয় র‌্যাবিস ভ্যাকসিন সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়ছে।

একই সাথে, সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসার জন্যও পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন মজুত নেই বলে জানানো হয়।

সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা সভায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানান, যদিও এ বছর এখনো পর্যন্ত ডেঙ্গুতে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। তবুও ডেঙ্গু ভয়াবহ আকারে হাজির হতে পারে। চলতি বছর যশোরে এ পর্যন্ত ৭৯৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।

সভায় যশোর শহরে কোনো কসাইখানা (কিলখানা) না থাকায় জনস্বাস্থ্য এবং গরু-ছাগল জবাইয়ের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে বলে ব্যাপক আলোচনা হয়। নিরাপদ মাংসের উৎস পাওয়া যাচ্ছে না। পশু পরীক্ষা ও ডাক্তারের সার্টিফিকেট ছাড়াই পশু জবাইয়ের কারণে অ্যানথ্রাক্সের ঝুঁকি বাড়ছে। সিভিল সার্জন জানান, অ্যানথ্রাক্স রোগাক্রান্ত পশুর মাংস রান্না করে খেলেও রোগমুক্ত হয় না। যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এই গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানের জন্য জেলা প্রশাসক জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও পৌরসভাকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব দেন।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের পক্ষ থেকে সভায় জানানো হয়, জেলার ৬৭২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরকারের সাথে চুক্তি মোতাবেক লিঙ্ক-৩ এর মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া হলেও, শুরুতেই ১৫৩টি সংযোগ অকেজো হয়ে পড়েছে। অথচ লিঙ্ক-৩ কর্তৃপক্ষকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এই অচলাবস্থা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানানো হয়।

মাসিক সমন্বয় সভায় শহরের সড়ক ও যানজট নিয়েও ব্যাপক আলোচনা হয়। মণিরামপুর বাজারের সরু ও ভাঙাচোরা রাস্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এছাড়া, যশোরের মণিহার থেকে মুরলিমোড় পর্যন্ত রাস্তাকে গ্যারেজ বানানো, গাড়িপার্কিং এবং বেদখল হয়ে যাওয়া সমস্যা সমাধানে জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা, সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. হিমাদ্রী শেখর, পৌর প্রশাসক রফিকুল হাসান, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শাহীন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সুজন সরকার, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আশরাফুল হক এবং প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন প্রমুখ।

Share.
Leave A Reply

Home
News
Notification
Search
Exit mobile version