# সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সর্বোচ্চ ভোট পেলেন রবিউল ইসলাম
বাংলার ভোর প্রতিবেদক
১৬ বছর পর নেতাকর্মীদের ভোটের মাধ্যমে যশোর জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়েছে। শনিবার দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে কাউন্সিলরদের ভোটে সভাপতি পদে অ্যাডেভাকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু ৭৪৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। সাংগঠনিক সম্পাদক তিনটি পদে রবিউল ইসলাম, মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, শহিদুল বারী রবু নির্বাচিত হয়েছেন।
যশোর টাউন হল আলমগীর সিদ্দিকী হলে ভোট গ্রহণ শেষে শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফলাফল ঘোষণা করনে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান।
প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, সভাপতি পদে ৭৪৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও যশোর চেম্বারের সভাপতি মিজানুর রহমান খান পেয়েছেন ৬৬৩ ভোট ও যশোর পৌরসভার সাবেক মেয়র মারুফুল ইসলাম মারুফ পেয়েছেন ৭৩ ভোট। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম পেয়েছেন সর্বোচ্চ ১৩৪১ ভোট, মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু পেয়েছেন ৮৪৫ভোট, সাবেক ছাত্রনেতা শহিদুল বারী রবু ৭২০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। আর কাজী আজম পেয়েছেন ৭১২ ভোট। যশোরে জেলা বিএনপির ১৬টি ইউনিটের এক হাজার ৬১৬জন কাউন্সিলারের মধ্যে এক হাজার ৪৮৪ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
ফলাফল ঘোষণার আগে আমান উল্লাহ আমান নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ফলাফলে কে নির্বাচিত হলো, কার ভোটে কে নির্বাচিত হলো সেটা দেখা যাবে না। একমাত্র বিএনপিই গণতান্ত্রিকপন্থায় বিশ্বাস করে বলেই আজ নির্বাচনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করলো। কার ভোটে কে নির্বাচিত হলো, কে কাকে ভোট দিলো সেটা ভুলে যেতে হবে। সবাইকে মনে রাখতে সবাই জিয়ার সৈনিক। সবাই ঐক্যবদ্ধ থেকে দলের জন্য কাজ করতে হবে। বিগত আন্দোলনে যেভাবে সবাই এক ছিলাম।’
এ সময় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, দীর্ঘ ১৬ বছর পর শনিবার বেলা সাড়ে ১০ টার দিকে স্থানীয় কেন্দ্রীয় ঈদগা ময়দানে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন শেষে বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর বেলা দুইটা থেকে শহরের টাউন হল ময়দানের আলমগীর সিদ্দিকী হলে কাউন্সিলরদের গোপন ভোটের আয়োজন করেন কেন্দ্রীয় ঘোষিত নির্বাচন কমিশন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৯ সালে। সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের ১০ বছর পর ২০১৯ সালের ২০ এপ্রিল যশোর জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত তরিকুল ইসলামের সহধর্মিনী অধ্যাপক নার্গিস বেগম আহ্বায়ক এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু সদস্যসচিব হন। ওই কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে বলা হলেও পেরিয়ে যায় ৬ বছর। শীর্ষ নেতারা বলছেন, এর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার একদলীয় শাসনব্যবস্থা চালু করার কারণে আন্দোলন ও কমিটি গঠন ঝিমিয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনকে ঘিরে দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে। যশোরে বিএনপির রাজনীতিতে এই সম্মেলন নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে মনে করছেন সংশি¬ষ্টরা। একই সাথে দলকে সুসংগঠিত করে আগামি সংসদ নির্বাচনে বিএনপি বিজয়ী করতে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।