বাংলার ভোর প্রতিবেদক
রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে যশোর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপঙ্কর দাস রতন ও সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার ঘোষের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। বুধবার মামলাটি করেছেন মানবাধিকার সংগঠন ‘রাইটস যশোর’র নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক।
বাদীর অভিযোগ, দীপঙ্কর দাস রতন ও তপন কুমার ঘোষ পূজা উদযাপন পরিষদের নাম ব্যবহার করে ২০২৪ সালের ১২ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ১২ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের স্বার্বভৌমত্ব, সংহতি এবং শৃঙ্খলার প্রতি হুমকিস্বরূপ নানা কার্যকলাপ পরিচালনা করেছেন।
অভিযোগ আমলে নিয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রহমত আলী কোতোয়ালি থানার ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামি দীপঙ্কর দাস রতন যশোর শহরের নলডাঙ্গা রোডের তারাপদ দাসের ছেলে এবং তপন কুমার ঘোষ খালধার রোডের ফটিক চন্দ্র ঘোষের ছেলে। আগামী ১৪ জুলাই এ মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন বিচারক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী সুদীপ্ত কুমার।
বাদী বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক অভিযোগের স্বপক্ষে যশোর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ কর্তৃক আওয়ামী ফ্যাসিবাদ পতনের পর প্রকাশিত একটি লিফলেটের কপি এবং একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের কাটিংসহ বিভিন্ন ডকুমেন্ট সংযুক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, ওই লিফলেটে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনের পর পরিকল্পিতভাবে দেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নাম উল্লেখ করে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে বলা হয় এসব মানুষ সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার। অথচ, এগুলো কোনো সাম্প্রদায়িক হামলা ছিল না। ফ্যাসিস্ট আমলে এসব লোকের হাতে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা নানাভাবে নির্যাতিত হয়েছেন।
অথচ, দীপঙ্কর দাস রতন ও তপন কুমার ঘোষ এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক উল্লেখ করে পরিকল্পিত প্রচারণা চালিয়ে দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্টের পাশাপাশি দেশের মধ্যকার শান্তি, শৃঙ্খলা বিনষ্ট করে দেশের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলে দিতে চেয়েছিলেন।
তারই ধারাবাহিকতায় আসামিরা সরকারের বিরুদ্ধে ঘৃণা, সহিংসতা উস্কে দেয়ার লক্ষ্যে সাম্প্রদায়িক হামলার মিথ্যা তথ্য দিয়ে লিফলেট তৈরি করে বিলি, সমাবেশে বক্তব্য ও সামাজিক মাধ্যমসহ মিডিয়ায় উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করেন। তাদের এসব বক্তব্যের মাধ্যমে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো হয়, যা দেশের স্থিতিশীলতা ও সংবিধান পরিপন্থি।
বাদী আরও অভিযোগ করেন আসামিরা বিভিন্ন সময় উল্লেখ করেন, নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর সংখ্যালঘুদের ওপর দমনপীড়ন বেড়েছে। প্রশাসন নিষ্ক্রিয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে হস্তক্ষেপ করতে হবে। এ ধরনের বক্তব্য ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে দেয়া হয়। এমনকি তাদের এসব বক্তব্য প্রচার হয় ভারতীয় গণমাধ্যমেও। যা উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও পূর্বপরিকল্পিত। পরবর্তীতে আসল ঘটনা জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে আসে।
বাদী বিনয় কৃষ্ণ মল্লিকের দাবি, আসামিদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড দেশের সার্বভৌমত্ব, সংহতি এবং শৃঙ্খলার প্রতি হুমকি। দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট ও দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র দৃষ্টিগোচর হওয়ায় তিনি আদালতে এ মামলা করেছেন।