# ক্ষোভ নাগরিক সমাজের
বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর পৌর এলাকায় ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলনে সাবমার্সিবল পাম্প ব্যবহারকারী বাসা-বাড়ির মালিকদের মাসে তিনশ’ টাকা বিল গুণতে হবে। ইতোমধ্যে তিন হাজার বাড়ির মালিককে সাবমার্সিবল বিল ইস্যু করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। পৌরসভার সরবরাহকৃত পানি না নিয়ে বিকল্প উৎসের ব্যবহার করায় তাদেরকে এই বিলের আওতায় আনা হয়েছে। পৌরসভার এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নাগারিক কমিটি।
জানা যায়, যশোর পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে প্রতিদিন ২ কোটি ৪৪ লাখ ২০ হাজার লিটার পানির চাহিদার বিপরীতে পৌরসভা উত্তোলন করে ২ কোটি ১১ লাখ লিটার পানি। পৌরসভার সরবরাহে প্রতিদিন ৩৩ লাখ লিটার পানি ঘাটতি থাকছে। সরবরাহ পানি ঘাটতি ও সংযোগ না থাকায় প্রায় ১১ হাজার বাড়ির মালিক বিকল্প উৎস হিসেবে সাবমারসিবল পাম্প ব্যবহারে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। বহুতল ভবনের মালিকরা সাবমারসিবল কিংবা মোটরের মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ উত্তোলন করে ব্যবহার করেন। এতে পৌর এলাকার ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলন ও অপচয় বাড়ছে। সাবমার্সিবল পাম্প ব্যবহারকারী মালিকদের লাগাম টানার উদ্যোগ নিয়েছে পৌরসভা। যদিও গত বছর সাবমার্সিবল পাম্প ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে বিল আদায়ের উদ্যোগ নিলেও বাস্তবায়ন হয়নি। এ বছর আবার সাবমার্সিবল পাম্প ব্যবহার বাবদ বিল আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ।
ইতোমধ্যে তিন হাজার বাড়ির মালিককে সাবমার্সিবল পাম্প বিল ইস্যু করা হয়েছে। প্রত্যেক হোল্ডিং মালিককে সাবমার্সিবল বাবদ মাসে তিনশত টাকা ফি পরিশোধ করতে হবে। বিলের কপি পাওয়ার পর ক্ষুব্ধ বাড়ির মালিকরা।
পৌরসভার এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে পৌর নাগরিক কমিটি। সংগঠনের যশোরের আহ্বায়ক শওকত হোসেন ও সদস্য সচিব জিল্লুর রহমান ভিটু জানান, পৌর নাগরিকদের দাবির মুখে পৌর কর্তৃপক্ষ ২০২৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি সংবাদকর্মী মিডিয়া ও শত শত নাগরিকের সামনে সাবমার্সিবল বিল বাতিলের ঘোষণা দেয়। এক বছর পর পৌর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সেই বিল পুনরায় চালু করায় আমাদের ক্ষুব্ধ করেছে। ফ্যাসিস্ট সরকার কর্তৃক জনতার আন্দোলনের মুখে বাতিলকৃত বিল চালু হওয়ায় আমাদের ভাবায়িত করছে অন্তর্বর্তী কালীন সরকার পতিত ফ্যাসিস্টকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে না তো? পৌরসভা বাতিলকৃত বিল নাগরিকদের সাথে আলোচনা বাদে নির্ধারণ করা স্বৈরাচারী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। আমরা পৌর কর্তৃপক্ষের নিবর্তনমূলক সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সাথে পৌর নাগরিক কমিটি যশোর কর্তৃক ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত সাবমার্সিবল বিল পরিশোধ করা থেকে বিরত থাকতে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি। দ্রুতই নাগরিক কমিটির সভা করে করণীয় ঠিক করা হবে। সাথে সাথে পৌরসভাকে তাদের নিবর্তনমূলক সিদ্ধান্ত বাতিলের আহ্বান জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে যশোর পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী (পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন) বিএম কামাল আহমেদ বলেন, পৌর এলাকার বাসা বাড়িতে প্রায় ১১ হাজার সাবমার্সিবল পাম্প রয়েছে। পৌরসভার সরবরাহকৃত পানি তারা না নিলেও বিকল্প উৎস হিসেবে ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহার করছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রথম পর্যায়ে তিন হাজার বাসা বাড়ির মালিককে সাবমার্সিবল বিল ইস্যু করা হয়েছে। গতবার যারা পানির বিল দেন, তাদের অনেককেই সাবমার্সিবল বিলও ইস্যু করা হয়েছিল। এ নিয়ে বিভ্রান্তি হয়। এবার যাচাই করে শুধু যারা সাবমার্সিবল ব্যবহার করছেন তাদেরকেই এ বিল দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সাবমার্সিবল বিল নিয়ে কোন আপত্তি থাকলে পৌর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষই সিদ্ধান্ত নিবেন।