বাংলার ভোর প্রতিবেদক
বিআরটিএ যশোর সার্কেল অফিসে দালালের মাধ্যমে ঘুষ ছাড়া সেবা মেলে না। সেবাগ্রহীতাদের জিম্মিকে করে ঘুষ আদায় করে দালাল চক্রটি। বিআরটিএ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাযোশে ঘুষ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে দালাল চক্রটি। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার দুপুরে বিআরটিএ যশোর অফিসে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একটি টিম। অভিযানে পাঁচ দালালকে আটক করা হয়। এসময় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল আহাদ ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে চারজনকে অর্থদণ্ড করেছেন। একজন মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন। দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের উপপরিচালক মো. আল আমিনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালন করা হয়।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, যশোর সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া এলাকার গোলাম রব্বানী বিশ্বাসের ছেলে মাহাবুব হাসান শিমুলকে ১০ হাজার টাকা, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে হুমায়ুন কবির মামুনকে ৬ হাজার টাকা, যশোরের অভয়নগর উপজেলার মশরহাটি গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে আবদুল ওয়াদুদ পলাশকে ৫ হাজার টাকা ও যশোর সদর উপজেলার বিরামপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে শফিকুল ইসলামকে ৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সাথে যশোর শহরের শংকরপুর এলাকার হালিমের ছেলে খোকনকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
দুদক যশোরের উপপরিচালক মো. আল আমিন বলেন, আমাদের কাছে অভিযোগ ছিল যশোর বিআরটিএ অফিসে দালালের দৌরাত্ম বেড়েছে। দালালের মাধ্যমে ঘুষ ছাড়া কোন সেবা পাওয়া যায় না। বুধবার সকালে দুদকের ছদ্মবেশী টিম পাঠানো হয় বিআরটিএ অফিসে। সেখানে দালালদের মাধ্যমে ঘুষ দিয়ে সেবা প্রাপ্তির চুক্তি করে দুদক টিমের সদস্যরা। ঘুষ বাণিজ্যে জড়িত দালাল, অফিস কর্মকর্তা, কর্মচারীদের চিহ্নিত করা হয়। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় দুপুরে দুদকের অভিযানিক টিম সেখানে যায়। এসময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতি ছিলেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে চার দালালকে অর্থদণ্ড করা হয়। একই সাথে একজনকে মুচলেকা নিয়ে সতর্ক করা হয়।
তিনি আরও বলেন, বিআরটিএ অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে যোগসাযোশে দালাল চক্রটি সেবাগ্রহীতাদের জিম্মিকে ঘুষ আদায় করেন। শুধু দালাল চক্র নয়, অভিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকেও চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতিবেদন পাঠানো হবে।
অভিযানে আরও উপস্থিতি দুদক যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আল আমিন, উপসহকারী পরিচালক জালাল উদ্দিন, তৌহিদুর রহমান, কৃষপদ বিশ্বাস।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিএ যশোরের সহকারী পরিচালক এএসএম ওয়াজেদ হোসেন বলেন, চারদিন হলো আমি এখানে যোগদান করেছি। দুদক যাদের ধরেছে, তারা অফিসের বাইরে রাস্তায় ছিল। আমার অফিসে কেউ সেবা নিতে এসে দালালের খপ্পরে কিংবা ঘুষ দিতে না হয়, সেই ব্যাপারে সতর্ক থাকবো। ঘুষ, দুর্নীতিতে কাউকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না।