প্রতিবেদক
আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে যশোর পৌরসভার রেল স্টেশন হরিজন কলোনীর বিদ্যুৎ লাইন সচল করে না দিলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুশিয়ার দিয়েছেন পৌরসভার হরিজনরা। বিদ্যুৎ লাইন কেটে দেয়ার প্রতিবাদে আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে যশোর শহরে বিক্ষোভ মিছিলে এ ঘোষণা দেন নেতৃবৃন্দ।
যশোর পৌরসভা শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে রেল স্টেশন হেলা সমাজ ও বাজার হরিজন কলোনী, মনিহার তালতলা কলোনী, পুরনো পৌরসভা কলোনী ও ধর্মতলা কলোনীর তিন শতাধিক হরিজন সদস্য দুই ঘণ্টা ধরে শহরের বিক্ষোভ মিছিল করেন।
যশোর পৌরসভার শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ সভাপতি মতি লাল বলেন, সোমবার দুপুর ১২টা থেকে রাত ১২টার মধ্যে যশোর পৌরসভার রেল স্টেশনের হরিজনদের দুটি কলোনীর বিদ্যুৎ লাইন সচল করে না দিলে যশোর পৌরসভার বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন সংগ্রাম ঘোষণা করবো।
তিনি আরও বলেন, ব্রিটিশ আমল থেকে আমাদের বাপ দাদারা বসবাস করে আসছেন। তবে কখনও তাদের বিদ্যুৎ বিল দিতে হয়নি। প্রিপেইড মিটার দেয়া মানে তাদের বিদ্যুৎ বিল আগে দিয়ে ব্যবহার করতে হবে। পৌরসভা তাদের মাত্র ৩ হাজার টাকা করে বেতন দেয়। তা দিয়ে কী হয়? বছরের পর বছর পৌরকর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে তামাশা করে আসছে। বেতন ভাতা না বাড়িয়ে বিদ্যুৎ বিল তাদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। এটা বড় অমানবিক বিষয়। শুনছি কয়েক কোটি টাকার বকেয়া বিল চাপবে। দিলে দেবে পৌরসভা। এ নিয়ে কয়েকবার পৌর মেয়রের সঙ্গে কথাও বলেছি। এখানে প্রিপেইড মিটার লাগানো যাবে না, সংযোগ বিচ্ছিন্নও করা যাবে না।
এদিকে, বিদ্যুৎ লাইন কেটে দেয়ার প্রতিবাদে গত দু’দিন কাজ বন্ধ রেখেছে যশোর পৌরসভার হরিজনরা। পৌরসভা শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রাখায় শহরের মোড়ে মোড়ে ময়লার স্তুপ জমা হয়েছে। পশু-পাখি ময়লা ভাগাড় ঘেঁটে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে পথচারীদের মুখে কাপড় দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
শহরে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি মোড়ে মোড়ে ময়লা স্তুপ তৈরি হয়েছে। কুকুর, বিড়াল, পাখি পা দিয়ে হাঁচড়িয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষাথী ও পথচারীরা মুখ চেপে চলাচল করছেন।
শহরের রেলগেট তেতুলতলা এলাকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ময়লা না নিয়ে যাওয়ায় পশু-পাখিতে এসব ময়লা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলছে। এতে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে ও পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এ বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া দরকার।
অপর বাসিন্দা সোহেল রানা বলেন, শহরসহ বিভিন্ন জায়গায় ময়লা ছড়ানো ছিটানো আছে। এসব ময়লা না নিয়ে যাওয়ায় দুর্গন্ধ ছাড়চ্ছে। এ কারণে শহরে চলাচল করতে কষ্ট হচ্ছে। পৌরসভার সাথে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের যে সমস্যা আছে তা সমাধান হওয়া জরুরী।
যশোর পৌরসভা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হিরন লাল সরকার বলেন, বর্তমান মেয়র আমাদের সাথে আলোচনা না করে রেল স্টেশন এলাকার হরিজন কলোনির বিদ্যুৎ এর লাইন গত দু’দিন ধরে বিচ্ছিন্ন রেখেছে। তার প্রতিবাদে আমরা পরিচ্ছন্ন কর্মীরা পৌরসভার সকল পরিচ্ছন্নের কাজ বন্ধ রেখেছি। আমরা নিজের আলোচনা করেছি। সমস্যা সমাধান না হলে আমরা কঠোর কর্মসূচি দেব।
এ ব্যাপারে যশোর পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোকছিমুল বারী অপু বলেন, পৌরসভার কোন কোন এলাকায় এনজিও কর্মীরা কাজ করে আবার কোন কোন এলাকায় পৌরসভার পরিচ্ছন্ন কর্মীরা কাজ করে। পরিচ্ছন্ন কর্মীরা যে এলাকায় কাজ করে। এদের কিছু পরিচ্ছন্ন কর্মী স্ট্রাইক করেছে।’
তিনি আরও বলেন, তিনটি কলোনীর বিল বাকি শুধু সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা। তাদের এ টাকা পৌরসভা পরিশোধ করবে না। তারা বলেছে, ওদের দাবি না মানলে তারা ডাস্টবিনের ময়লা নেবে না ও রাস্তা ঝাড়ু দেবে না। এখন তারা যাই করুক তাদের সাথে কোন আপসে যাওয়া হবে না। আমরা নিজেরা সবাই বসে একটা সিদ্ধান্ত নেব কি করা যায়।
শিরোনাম:
- আলুর দাম লাগামহীন ভোক্তার নাভিশ্বাস
- শীতে ফুটপাতে গরম কাপড় বিক্রির ধুম
- একটা সংস্কার কমিটি দিয়ে সংবিধান সংস্কার সম্ভব না: মির্জা ফখরুল
- নিখোঁজের ৩ দিন পর কপোতাক্ষ নদে মিলল বৃদ্ধার মরদেহ
- কৃষ্ণনগরে আরাফাত কোকো স্মৃতি ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন রতনপুর
- পাখির সাথে মানুষের ভালোবাসার গল্প !
- সব রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখবে বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা
- যশোর মটর পার্টস ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচন সংস্কার ও উন্নয়ন পরিষদের পক্ষে ২৭টি মনোনয়নপত্র ক্রয়