বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর শহরের প্রাণকেন্দ্র এইচএমএম রোডে ড্রেনের উপর অবৈধভাবে একটি দোকান নির্মাণ করেন সদর উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান বাবলু। তিনি আট বছর আগের ড্রেন দখল করে এ স্থাপনা তৈরি করেন বলে জানিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। ড্রেনের উপর পাকা দোকান নির্মাণ করায় ব্যাহত হত পানি নিষ্কাশন। বিভিন্ন সময়ে স্থাপনাটি উচ্ছেদে পৌরসভার পক্ষ থেকে নোটিশ পাঠালেও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের চাপের মুখে উচ্ছেদ করা যায়নি। কিন্তু এবার রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে রক্ষা হয়নি দোকানটি। মঙ্গলবার পৌরসভা প্রশাসকের নির্দেশে অবৈধ স্থাপনা ‘গ্রীণ টাচ্’ নামে ওই দোকানটি ভেঙে দিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। উচ্ছেদের পর পৌর কর্তৃপক্ষ বলেছে, যে যত প্রভাবশালীই হোক পৌরসভার জায়গা দখল করে রাখলে, কাউকেই ছাড় দেয়া হবেনা। পুনরায় দখলদারিত্ব কায়েম করতে চাইলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা যায়, যশোর শহরের সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে দখল স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করে গত বুধবার। অভিযানের চলমান কর্মসূচির অংশ হিসাবে গতকাল মঙ্গলবারও শহরের অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন ও পৌরসভা।
এদিন, দুপুরে শহরের ঈদগা মোড় এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। ঈদগা মোড়ে বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এর পর দড়াটানা এম এইচ রোডের সামনে বিভিন্ন ভাসমা দোকান উচ্ছেদ করা হয়। পরে ‘গ্রীণ টাচ্’ নামে ওই দোকানটি ভেঙে দেয় পৌরকর্তৃপক্ষ। এ উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাবিদ হোসেন ও পৌরসভার প্রকৌশলী কামাল হোসেন। অভিযান পরিচালনার সময় যশোর পৌরসভার কর্মকর্তাসহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পৌরসভার প্রকৌশলী কামাল হোসেন বলেন, ‘কিছু মানুষ ড্রেনের ওপরে অবৈধ ঘর তৈরি করে পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত করছে। রাস্তার পাশে ফুটপাত দখল করে অবৈধ দোকান দেয়ার ফলে শহরে যানজট হচ্ছে। এ কারণে আজকের এ অভিযান। রাস্তার পাশে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে এ অভিযান চলমান থাকবে। পুনরায় দখলদারিত্ব কায়েম করতে চাইলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।’
যশোর পৌর কর্তৃপক্ষ গত পাঁচ দিনে দেড় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে। পৌর কর্তৃপক্ষ যানজট ও জলাবদ্ধতা নিরসনে শহরের বিভিন্ন ড্রেন ও ফুটপাত দখল করে নির্মিত এসব স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে নামে। তবে সরকারের পতনের পর পৌরসভার নতুন প্রশাসক এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছেন। অভিযানে সড়কের পাশে সরকারি জায়গায় গড়ে তোলা টং দোকান থেকে শুরু করে বাদ যায়নি আওয়ামী লীগের কার্যালয়, হোটেল, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানকে স্বাগত ও অভিনন্দন জানিয়েছে নগরবাসী। তারা বলছেন, সরকারি সকল জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে পরিস্কার করতে হবে। যাতে সড়কে যানজট কমে। ফুটপাত দিয়ে চলাচল করতে পারি। একই সাথে ড্রেন পরিস্কার থাকলে অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে না বলে মনে করেন তারা।
যশোর পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগ যশোরের উপপরিচালক রফিকুল হাসান বলেন, পৌরসভার ড্রেনের ওপরে অবৈধ ঘর তৈরি করায় পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। রাস্তার পাশে ফুটপাত দখল করে অবৈধ দোকান দেওয়ায় শহরে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে অভিযান চালানো হচ্ছে।