বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আসাদুজ্জামান ওরফে বুনো আসাদ হত্যা মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশকে আদেশ দিয়েছেন আদালত। এই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা ইন্দ্রজিৎ মুখার্জীকে অভিযুক্ত না করা এবং এজাহারভুক্ত অপর দুই আসামির অব্যাহতি চাওয়ায় বাদীর নারাজি আবেদন করেন। ২১মার্চ বিচারক জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহম্মেদ থানা পুলিশের দেয়া চার্জশিট নামঞ্জুর করে পুনঃতদন্তের আদেশ দেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, যশোর শহরের বেজপাড়া বনানী রোডের আসাদুজ্জামান আসাদ। তিনি বাড়িতে গরুর খামার করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। একই এলাকার ইন্দ্রজিৎ মুখার্জী ওরফে উৎপল ওরফে কানাই লাল কানু সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (পরিদর্শক) এনবিআর, কাস্টমস এক্সাইজ ভ্যাট কমিশনারেট চট্টগ্রামে কর্মরত আছেন।
২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ইন্দ্রজিতের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে ঘুষ বানিজ্য ও অনিয়মের ব্যাপারে অভিযোগ করেন আসাদুজ্জামান আসাদ। ওই অভিযোগটি প্রত্যাহারের জন্য আসাদকে চাপ প্রয়োগ করেন ইন্দ্রজিৎ মুখার্জী। কিন্তু রাজি না হওয়ায় একই বছরের ৪ নভেম্বর ইন্দ্রজিৎ মুখার্জীসহ অন্য আসামিরা আসাদকে খুনের জন্য পরিকল্পনা করেন।
৮ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে এলাকার সাদেক দারোগার মোড়ে ওষুধ কিনতে গিয়েছিলেন আসাদ। এ সময় ইন্দ্রজিতের হুকুমে অন্যরা সাদেক দারোগার মোড়ের নুরুন্নাহান হোমিও হলে সকল আসামি আসাদকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত, কিল ও ঘুষিসহ এলোপাতাড়ি ভাবে মারপিট করে। এর পরে আসাদের পকেটে থাকা ১২ হাজার টাকাও ছিনিয়ে নেয় আসামিরা।
খবর পেয়ে বাড়ির লোকজনে প্রথমে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল এবং অবস্থার অবনতি হলে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এরই মধ্যে আসাদুজ্জামানের ছোট ভাই সাহিদুর রহমান বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাতনামা আরো ৫/৭জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা করেন।
কিন্তু চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় ২১ নভেম্বর আসাদ মারা যান। মামলাটি তদন্ত করেন কোতোয়ালি থানার এসআই শরীফ আল মামুন। মামলাটি তদন্তকালে বাদী এবং তার দেয়া সাক্ষীদের সাথে কোন প্রকান যোগাযোগ না করে আসামিদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নিজের মনগড়া একটি চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন। ওই চার্জশিটে আসামি চঞ্চল ও আকাশের অব্যাহতি চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী এবং অর্থযোগানদাতা উন্দ্রজিৎ মুখার্জীকে মামলার চার্জশিটে অর্ন্তভুক্ত করা হয়নি। ফলে চার্জশিটের বিরুদ্ধে বাদীর দেয়া নারাজি আবেদনের শুনানীতে বৃহস্পতিবার মামলাটি পূনঃতদন্তের জন্য ডিবি পুলিশকে আদেশ দেয়া হয়েছে।
বাদী সাহিদুর রহমান জানিয়েছেন, তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নিজের মনগড়া চার্জশিট দাখিল করেছিল। সে কারণে নারাজি আবেদনের প্রেক্ষিতে পুনঃতদন্তে দেয়া হয়েছে।
এই মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী রুহিন বালুজ বলেছেন, তদন্ত কর্মকর্তা যথাযথ তদন্ত করেননি। ফলে ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।