রাজগঞ্জ প্রতিনিধি
মণিরামপুর উপজেলা রাজগঞ্জ, নেংগুড়াহাট এলাকার মাঠে মাঠে শুরু হয়েছে নতুন ধান কাটার মহোৎসাব। দিগন্তজোড়া প্রান্তরে সোনালী ঢেউ। বৈশাখের উত্তাল বাতাসে পাকা ধানের শীষের দোলায় মাঠের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। এর মাঝেই দেখা গেলো কাস্তে হাতে ব্যস্ত কৃষকরা ধান কাটতে। মাঠের পর মাঠ এখন সোনালি রঙের পাকা ধানে ভরে আছে যতদূর চোখ যায়। ফসলের ক্ষেতে ধান কাটার ধুম পড়েছে।
মণিরামপুর উপজেলা চালুয়াহাটি ইউনিয়নসহ বিভিন্ন গ্রামের মাঠে মাঠে পাকা ধান কেটে গোলায় তুলতে ব্যস্ত কৃষাণীরা। কোনো কোনো ক্ষেতে কৃষক ধান কাটছেন, আবার কোনো কোনো ক্ষেতের ধান। এখনও পুরোপুরি পাকেনি কৃষকেরা কেউ ধান কাটছেন, কেউ বাঁধছেন আঁটি। আবার কেউবা ঘাড়ে করে ধানের বোঝা নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। মোবারাকপুর গ্রামের বোরো চাষি আবুল খায়ের বলেন, বৈশাখের প্রচণ্ড খরতাপে সকাল থেকে পড়ন্ত বেলা পর্যন্ত মাঠে মাঠে কৃষক সোনালী ধান কাটছেন। একদিকে কৃষকরা ধান কেটে বাড়ির আঙিনায় জড়ো করছেন, অন্যদিকে হাতে বা মিশন দিয়ে একই সঙ্গে ধান ঝাড়ার কাজ সম্পন্ন করছে কৃষাণীরা। ধান ঝাড়ার শেষে বাতাসে ধান উড়িয়ে বাকি কাজটুকু সম্পন্ন করে ঘরে কিম্বা গোলায় তোলার কাজে কৃষাণীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।লক্ষণপুর গ্রামের কৃষক আবু দাউদ বলেন, আমাদের এখন দম ফেলার ফুরসত নেই। নতুন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, মাঠ জুড়ে ধান কাটার মহোৎসব শুরু হয়ে গেছে। কয়েক বছর ধরে গ্রামে ধান কাটা শ্রমিক সংকট চলছে যে কারণে অনেক গৃহিণীও মাঠে এসে ধান কাটছেন। গ্রামের কৃষক প্রবীণ মল্লিক বলেন, বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন বোরো ধান কাটার উৎসব চলছে। ফলন মোটামুটি ভালো হওয়ায় কৃষকরাও খুশি, কিন্তু ফড়িয়া বা মধ্যস্বত্বভোগীদের তৎপরতায় ফসলের কাক্সিক্ষত মূল্য পাওয়া নিয়ে কৃষকদের মধ্যে রয়েছে শঙ্কা। তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েক বছর ধরে তারা ধানের ভাল ন্যায্যমূল্য পান না। তিনি আরোও বলেন, সরকার বোরো ধানের দাম আগেভাগে নির্ধারণ করে দিলে কৃষক ভালো দাম পাবেন। অনেক জমির মালিক বলেন, ধান কাটার শ্রমিক খুব কম পাওয়া যাচ্ছে, ফলে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে। চালুয়াহাটি ইউনিয়ন কৃষি উপসহকারী বলেন, এ বছর ১ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে।
অনেক জায়গা বোরো ধানকাটা শুরু হয়ে গেছে। কৃষি উপসহকারি মারুফুল হক ও হাবিবুর রহমান বলেন, পোকার আক্রমণের পরও শেষ পর্যন্ত এবার বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে, এর মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ ধান কাটা হয়ে গেছে।