রাজগঞ্জ সংবাদদাতা

পলালেখা করে চাকরি করে সংসারের স্বচ্ছলতা ফেরানোর পাশাপাশি সামাজিক মান মর্যদার ইচ্ছা থাকলেও দারিদ্রতার কষাঘাতে সে স্বপ্ন যখন ব্যর্থ হওয়ার মুখে ঠিক তখনই ভ্রাম্যমাণ মধু চাষ করে সফলতা পেয়েছেন যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ অঞ্চলের দুই মধু চাষি সুমন ও এনামুল।

ভারাক্রান্ত হৃদয়ে নিজের সফলতার কথা বলছিলেন, উপজেলার হাসাডাংগা গ্রামের সুমন ও এনামুল হক। তারা বলেন, দারিদ্রতার কারণে অল্প বয়সে সংসারের হাল ধরতে গিয়ে স্বল্পপরিসরে মৌমাছির চাষ শুরু করি।

চালুয়াহাটি গ্রামের শেষ মাথায় রয়েছে তাদের মৌমাছি খামার। আলাপের সময় সুমনও এনামুল তুলে ধরেন মৌ-চাষের বিভিন্ন দিক। ২০২৩ সালে দুইজন মাত্র ৬৪টি বাক্স দিয়ে মৌচাষ শুরু করলেও বর্তমানে তাদের ১২১টি মৌ বাক্স রয়েছে। মৌচাষের জন্য ঘুরে বেড়ান বিভিন্ন জায়গা। শুরুতে নিজ গ্রামের নজরুলের জমিতে বাক্স বসিয়ে গড়ে তোলেন খামার।

তারা জানান, ৫ থেকে ৬শ’ টাকা খরচ করে তৈরি করা হয় এক একটি বাক্স। প্রতিটি বাক্সে থাকে ৭টি করে চাক। যা বাজার থেকে কিনতে হয় প্রতিটি সাড়ে পাঁচশ টাকা দরে। প্রতিটি বাক্স দিয়ে কমপক্ষে দুই বছর অনায়াসে মধু সংগ্রহ করা যায়।

প্রতিটি বাক্সে একটি করে রাণী মৌমাছি ছাড়াও অসংখ্য পরিমাণে মৌমাছি থাকে। প্রতিটি মৌমাছি সরিষাসহ বিভিন্ন ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে ওই বাক্সে জমা করে। এরপর সাত থেকে দশ দিন পরপর একবার করে ওই বাক্স থেকে প্রায় দুই কেজি পরিমাণ মধু সংগ্রহ করেন তারা। প্রতিটি বাক্স থেকে বছরে প্রায় ১০০ থেকে ১৬০ কেজি মধু সংগ্রহ করা যায়।

খুচরা বাজারে প্রতিকেজি মধু ৫০০শত টাকা করে বিক্রি করলে ও এখনো পর্যন্ত এবছরের পাইকারি দাম সম্পর্কে কিছু জানতে পারেননি তারা। মূলত শীত মৌসুমে সরিষা ফুল থেকে আসে সবচেয়ে বেশি মধু।

তবে সারাবছরই বিভিন্ন ফুল থেকে সংগ্রহ করা হয় মধু। বিভিন্ন এলাকার মধুব্যবসায়িরা তাদের কাছ থেকে পাইকারি মূল্যে মধু কিনেন।

এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানির কাছে মধু বিক্রয় করেন সুমোন। এ ব্যাপারে এনামুল বলেন, মৌমাছি চাষ করে সংসার জীবনে বেশ ভালোই আছি। তবে পাইকারি মধু বিক্রিতে সরকারিভাবে দাম নির্দিষ্ট করে দিলে আরও বেশি লাভবান হওয়া যেতো বলে অভিমত সুমনের।

Share.
Exit mobile version