বাংলার ভোর প্রতিবেদক
করোনার সময় গত দুই বছর মন্দা গেছে। ঢাকার ট্যানারি ব্যবসায়ীরা খুচরা ব্যবসায়ীদের বেশিরভাগ টাকা দিয়ে দেয়ায় এবার যশোরের রাজারহাটে চামড়ার ব্যবসা ভালো হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের ট্যানারি মালিকদের কাছে তাদের প্রায় কমপক্ষে ১২ কোটি টাকা বকেয়া ছিল। তাদের সেই বেশিরভাগ টাকা তারা পরিশোধ করেছেন। এ কারণে তাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তবে এবার পশুর দাম তুলনামূলক বেশি। বিপরীতে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতির কারণে পশু কোরবানির পরিমাণও কমতে পারে। সেক্ষেত্রে চামড়ার আমদানিও কমবে। এসব বিষয়ে চিন্তিত তারা।
যশোরের রাজারহাট দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বৃহত্তম চামড়ার মোকাম। এই চামড়া হাটকে ঘিরে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ব্যবসায়ী রয়েছেন। ঈদ-পরবর্তী হাটেই অন্তত ১০ কোটি টাকার চামড়ার ব্যবসা হয়। খুলনা বিভাগের ১০ জেলার ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, ঝালকাঠি, রাজশাহী, পাবনা, ঈশ্বরদী ও নাটোরের বড় ব্যবসায়ীরা এখানে চামড়া বেচাকেনা করেন। সাধারণত কোরবানি পরবর্তী হাটবারে রাজারহাটে লক্ষাধিক চামড়া বেচাকেনা হয়। কিন্তু গত ৪ বছর ব্যবসায় মন্দা ছিল। এর বাইরে গত কয়েক বছরে চামড়ার বাজারের দরপতনও ছিল লক্ষ্যণীয়।
এ বিষয়ে বৃহত্তর যশোর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মুকুল বলেন, কোরবানি ঈদ পরবর্তী হাটে লক্ষাধিক চামড়া বেচাকেনার মধ্য দিয়ে অন্তত ২০ কোটি টাকা হাতবদল হয়। এ হাটের অনেক ব্যবসায়ীর মূলধন ট্যানারি মালিকদের কাছে আটকা ছিল। সেই টাকা বেশিরভাগ উদ্ধার হয়েছে। তবে স্থানীয় আড়তদারদের কাছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের টাকা আটকে রয়েছে। তারপরও এবার আশা করছি রাজারহাটে চামড়া কেনাবেঁচা ভালো হবে।
রাজারহাটের চামড়া ব্যবসায়ী মোস্তাক হোসেন জানান, সরকার ট্যানারি মালিকদের ব্যাংক ঋণ দিলেও আমাদেরকে দেয়না। তাছাড়া বর্তমান বাজার ব্যবস্থা অস্বাভাবিক। মানুষের সবক্ষেত্রে ব্যয় বাড়লেও আয় হচ্ছেনা। এবার অনেকে যারা একটি গরু কোরবানি দিত তারা ভাগে দিচ্ছে। এতে চামড়ার আমদানি কমে যাবে বলে তিনি আশংকা করেন।
রাজারহাট চামড়া বাজারের সাবেক ইজারাদার চামড়া ব্যবসায়ী হাসানুজ্জামান হাসু বলেন, চামড়ার দাম এখন মোটামুটি ভালো। এরপরও চামড়ার যে দাম নির্ধারণ করা হবে সে অনুযায়ী বেচাকেনা হবে। ব্যবসায়ীরাও সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের উপকরণের দাম অনেক বেড়েছে।