বাংলার ভোর প্রতিবেদক
ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলার জন্য যশোরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। জেলার অন্তত ২২৪৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। একইসঙ্গে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ, রেড ক্রিসেন্ট, ফায়ার সার্ভিসসহ স্বেচ্ছাসেবক টিম প্রস্তুত রয়েছে।
যশোর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রিজিবুল ইসলাম জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলার জন্য জেলার ১২৮৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৯৫৬টি মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কলেজকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে পর্যাপ্ত চাল, শুকনো খাবার ও নগদ অর্থ রাখা হয়েছে।
যশোরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদিক জানান, জেলার সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে একটি করে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে জেলা হাসপাতালসহ ৮ উপজেলায় ৮টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত করা হয়েছে। একইসঙ্গে সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত ১ থেকে দুজন করে জনবল নিযুক্ত করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে জেলার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে।
ডেপুটি সিভিল সার্জন নাজমুস সাদিক আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সিভিল সার্জন অফিসের পক্ষ থেকে খাবার স্যালাইনসহ জরুরি প্রতিরোধ ও প্রতিষেধক ওষুধ ও উপকরণ পর্যাপ্ত মজুত করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট এবং সাপে কাপড় দেওয়া রোগীর জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক অ্যান্টিভেনম মজুত রাখতে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান সমূহকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য সহকারীসহ অন্যান্য মাঠকর্মীদের নিজ নিজ এলাকায় সতর্কভাবে অবস্থান করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে এবং যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
তিনি জানান, কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চলমান সার্বক্ষণিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি জরুরি পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। যেকোনো স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বা সমস্যায় নিকটস্থ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের সহযোগিতা গ্রহনের জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
এদিকে যশোর রেড ক্রিসেন্টের সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের সঙ্গে রেডক্রিসেন্ট যশোর টিম সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। জেলাজুড়ে ১০০ জন ভলান্টিয়ার প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম প্রস্তুত করা হয়েছে। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ইউনিট লেভেল অফিসার মোক্তার হোসেনসহ রেড ক্রিসেন্টের সদস্য।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২০ সালে ২০ মে প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ঘরের ওপর গাছ পড়ে যশোরে মা-মেয়েসহ ১২ জনের মৃত্যু হয়েছিল। যশোরের বিভিন্ন উপজেলায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে যশোরের শার্শা উপজেলায় চারজন, চৌগাছায় দুজন, বাঘারপাড়ার একজন ও মণিরামপুর উপজেলার পাঁচজন ছিলেন।