বাংলার ভোর প্রতিবেদক
শরতের অবিরাম বর্ষণে ভিজেই চলেছে যশোরের প্রাণ প্রকৃতি। এ বর্ষণের যেন কোন শেষ নেই। যশোরাঞ্চলে গত দু’দিন যাবৎ কখনো প্রবল আবার কখনো গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হয়েই চলেছে। এতে অনেকটাই বিপর্যস্ত মানুষের জনজীবন। বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষের জীবনে এ বৃষ্টি যেন অভিশাপ হয়ে দেখা দিয়েছে। তারা বৃষ্টির পানিতে ভিজে কাজে নেমেছেন অথবা বেকার সময় কাটিয়েছে। বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে রিকশা চালানো, বোঝা টানা অথবা ফুটপাতে কোনও কিছু বিক্রি করা যেন দুরূহ হয়ে পড়েছে। একইসাথে অফিসগামী চাকরিজীবী কিংবা শিক্ষার্থীরাও পড়েন বিপাকে। তারা বৃষ্টিতে ভিজে স্কুল বা কলেজ থেকে বাড়ি ফিরেছে। অবশ্য যশোরে দু’দিনের অবিরাম বর্ষণে নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সড়কের কোথাও কোথাও বৃষ্টির পানি জমতে শুরু করেছে।
যশোর বিমান বাহিনী আবহাওয়া অফিস সূূত্রে জানা গেছে, যশোরে বৃহস্পতিবার ভোর ৬ টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ২৩ মিলিমিটার আর বুধবার দিনভর বৃষ্টিতে ৭৭ মিলিমটিার রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে মৌসুমি অক্ষের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ মধ্য প্রদেশ, উড়িষ্যা, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির কারণে সাগরে তিন নম্বর এবং নদীতে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। যশোর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
টানা দুইদিন বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার আগাম শীতকালীন সবজির খেত বলে জানিয়েছে যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। যশোর পৌর শহরের কয়েকটি নিচু এলাকা বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়েছে। সেসব এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। অনেকের বাড়িতে পানি উঠেছে। টানা বর্ষণে দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের লোকজন।
প্রাকৃতিক দুর্যোগকে মেনে নিলেও পৌর কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কারণে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে বলে জানান শহরের বেজপাড়া চোপদারপাড়া এলাকার বাসিন্দা জিল্লুর রহমান ভিটু। অবিলম্বে পরিকল্পিতভাবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করে পানি অপসারণসহ এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।
যশোর পৌরসভার পানি নিষ্কাশন বিভাগের প্রকৌশলী এসএম কামাল বলেন, জলাবদ্ধতার অনেকাংশ হ্রাস পেয়েছে। আমরা ড্রেনের পানি নিষ্কাশনে যে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে সেগুলো অপসারণ করছি। বর্তমানে পৌর প্রশাসকের উপস্থিতিতে চাঁচড়া এলাকায় এস্কেভেটর দিয়ে পানি বের হওয়ার প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে কাজ চলছে।