শ্রীপুর (মাগুরা) সংবাদদাতা
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার আমলসার ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামে ফেসবুকে নবীজীকে নিয়ে কটুক্তি করায় দুটি হিন্দু পরিবারের বসতঘরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে স্থানীয় বিক্ষুব্ধরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর সঙ্গে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এতে গ্রামবাসীর ছোড়া ইট পাটকেলের আঘাতে পুলিশের অন্তত ১৫ জন এবং রাবার বুলেটের আঘাতে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এ সময় উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেন।
এলাকাবাসী জানায়, শ্রীপুর উপজেলার কোদলা গ্রামের জয়ন্ত কুমার মণ্ডল শনিবার সকালে নিজের ফেসবুক একাউন্ট থেকে তার এক বন্ধুর ওয়ালে নবীজী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে কটুক্তি করে একটি কমেন্ট পোস্ট করে। এ ঘটনার পর সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ওই গ্রামের কয়েকজন জয়ন্ত মন্ডলকে বাড়ি থেকে ধরে মারধর করে আটকে রাখে। বিষয়টি জানতে পেরে শ্রীপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে জয়ন্ত মন্ডলকে উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। এ সময় বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী জড়ো হয়ে পুলিশকে ঘেরাও করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে হামলাকারীদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। কয়েক ঘন্টা ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে চলা সংঘর্ষে পুলিশের পাশাপাশি রামচন্দ্রপুর গ্রামের শিশু ও নারী পুরুষসহ অর্ধ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়। তাদেরকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মাগুরা ২৫০ শয্যা ও ফরিদপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে পুলিশ বিকাল ৩টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ অন্যান্যদের সহযোগিতায় কটুক্তিকারী যুবক জয়ন্ত মন্ডলকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গেলেও উত্তেজিত এলাকাবাসী জয়ন্ত মন্ডলের বাড়ি এবং প্রতিবেশী মহিন্দ্রি মন্ডলের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
মাগুরা পুলিশ সুপার মশিউদ্দৌলা রেজা বলেন, ফেসবুকে কটুক্তিকারী যুবককে গ্রামের মধ্যে আটক করে মারধর করা হচ্ছে এমন খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে উত্তেজিত এলাকাবাসী পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পক্ষ থেকে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়। পরে ওই যুবককে আটক করে থানায় নেয়া হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।