বাংলার ভোর প্রতিবেদক


যশোরের শার্শা উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র না মেনে বড় অংকের ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে প্রভাতী সংঘ নামে একটি ঐতিহ্যবাহী ক্লাব বিতর্কিতদের দখল করিয়ে দিতে সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক কমিটির সদস্য, সাংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব ও সুধীজনেরা। তবে তৌহিদুর রহমান জানিয়েছেন কমিটির অনুমোদন করিয়ে নিতে তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিল।  


জানা গেছে, গত ২১ সেপ্টম্বর গভীর রাতে এই কমিটির সভাপতি ইমদা তার দলবল নিয়ে প্রভাতী সংঘ দখল করে ক্লাবটিতে  রাজনৈতিক নেতাদের ছবি সাটিয়ে দেয়। পরের দিন প্রভাতি সংঘ সদস্যদের অভিযোগে ২২ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোসহ দেশের বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে বাধ্য হয়ে  ক্লাব দখল ছেড়ে সেখান থেকে রাজনৈতিক নেতাদের ছবি উঠায় ইমদাদ। তবে ক্লাব দখল করতে এবার নতুন ফন্দি আটে। নাম মাত্র কাগজ পত্র জমা করে শার্শা ও যশোর সমাজ সেবা কর্মকর্তাকে বড় অংকের ঘুষ ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে কমিটির অনুমোদন  করিয়ে নেয়। এ কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দাবি করে ফেসবুকে তাদের ছবি পোস্ট দেয় তার অনুসারীরা।


শার্শা উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি অস্বীকার করেন। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়েছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি। তবে তিনি বলেন, তিনি অসহায় ও নিরুপায় অবস্থায় গত ১১ মার্চ কমিটির কাগজে সই করেছেন।


প্রভাতী সংঘের পূর্বের কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজ্জোহা সেলিম জানান, নতুন কমিটিতে পুরনো কমিটির একজনও নেই। এছাড়া অধিকাংশই সমাজের বিতর্কিত। এরা পূর্বের কমিটির কেউ না হয়েও কমিটি অনুমোদন নিতে কাগজ পত্র কোথা থেকে কিভাবে পেল এটিও একটি প্রশ্ন? এতে করে ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির সুনাম ক্ষুন্ন হবে। যারা যাচাই বাছাই না করে কমিটির অনুমোদন দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবিও জানান তিনি।


বেনাপোল পৌর ছাত্রদলের আহবাহক আরিফুল ইসলাম জানান, এমন একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের কমিটি বিতর্কিতদের দিয়ে কিভাবে গঠন হলো জানতে চাইলে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা অনুতপ্ত হয়ে বলেন, হুমকি দিয়ে কমিটির অনুমোদন করানো হয়েছে। ছাত্র নেতা আরিফ আরো বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজি নাজিব হাসানকে ফোন দিয়ে কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনিও জানিয়েছেন এ কমিটি অনুমোদনের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তবে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা ইউএনওকে জানিয়েছেন তাকে ভয়, ভীতি দেখিয়েছিল নতুন কমিটির লোকজন।


পূর্ব কমিটির সদস্য যায়যায় দিন পত্রিকার বেনাপোল প্রতিনিধি জি এম আশরাফ জানান, বিগত দিনে যারা প্রভাতী সংঘের সাথে জড়িত ছিল তারা সবাই সামাজিক ও সাংস্কৃতিক  ব্যক্তিত্ব। এবার এ কমিটিতে অধিকাংশই বিতর্কীত। সমাজ সেবা কর্মকর্তাদের এমন একটি কমিটির অনুমোদন প্রশ্নবিদ্ধ।


শার্শা উপজেলা ছাত্র দলের আহবায়ক শরিফুল ইসলাম চয়ন ও পৌর যুবদলের আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, গঠনতন্ত্র না মেনে বিতর্কিত এই কমিটি যদি দ্রুত বাতিল না করা হয় তাহলে সমাজ সেবা কর্মকর্তার অনিয়মের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানানো হবে।

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Exit mobile version