সাতক্ষীরা সংবাদদাতা
চারটি ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পারাপারের এই একটি মাত্র সেতু। কিন্তু সেতুটি নষ্ট হয় ২০২০ সালে। ওই বছরের শেষ দিকে নতুন করে কাজ শুরু হয় সেতুটির। কিন্তু৩ বছরেও শেষ হয়নি সেতুর কাজ নির্মাণ। এই ভোগান্তি দেখার যেন কেউ নেই।
বলছি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার রইচপুর খালের ওপর সেতুর কথা। যেটি নির্মাণ শুরু হয় ২০২১ সালে। সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ দেয়া হয় ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সল্যুশন ডিজাইনকে। কার্যাদেশ অনুযায়ী সেতু নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা ২০২২ সালের নভেম্বরে। কিন্তু তিন বছর পেরিয়ে গেলেও কেবল তিনটি পিলার ঢালাই ছাড়া দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি সেতুর।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, বারবার তাগাদা দেয়ার পরও কাজ করানো যাচ্ছে না সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে দিয়ে। সর্বশেষ ঠিকাদারকে ছয় মাসের সময় নির্ধারণ করে কাজ শেষ করার জন্য চিঠি দিয়েছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্টরা।
পথচারী রাহাত রাজা জানান, আমি এই রাস্তা দিয়ে প্রায় প্রতিদিন যাতয়াত করি। কিন্তু যখন এই সেতুর কাছে আসি তখন ভয় পাই। খালে পড়ে যাব কিনা। কারণ হলো এখানে সেতু নেই ৩ বছর হলো। অস্থায়ী ভাবে কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে সেটার অবস্থায় তথৈবচ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শহরের প্রবেশমুখ ইটাগাছা-ঘোনা সড়কের রইচপুর খালের ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে সেতুটি। সদর উপজেলার ঘোনা, শিবপুর, আগড়দাড়ী ও আলিপুর ইউনিয়নের অন্তত ৫০ হাজার মানুষের যাতয়াতের মাধ্যম হলো রইচপুর সেতু। ২০২১ সালে নতুন সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হলেও অদ্যাবধি তা শেষ হয়নি। এতে করে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের। বিকল্প বাঁশের সেতুতে সাইকেল মোটরসাইকেল পারাপার হয় ঝুঁকি নিয়ে। জরুরি প্রয়োজনে সেবাদানকারি অ্যাম্বুলেন্স এমনকি ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যাতায়াতেরও নেই কোন ব্যবস্থা।
সাতক্ষীরা পৌরসভার কাউন্সিল জাহাঙ্গীর কবির কালু জানান, পৌরসভার শেষ সীমানা হলো রইচপুর। তাছাড়া ব্যস্ততম সড়ক এটি। স্থানীয় সংসদ সদস্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও কাজের অগ্রগতি পাওয়া যায়নি।
সাতক্ষীরা এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অনূর্ধ্ব ১০০ মিটার সেতু নির্মাণ প্রকল্পের অধীনে সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সল্যুশন ডিজাইনের স্বত্বাধিকারী মাহবুবর হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জানান, শহরতলির রইচপুর এলাকার সেতুটি গুরুত্বপূর্ণ। এ সড়ক দিয়ে সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের বাসিন্দারা যাতায়াত করেন। জেলার একমাত্র বিনোদন পার্ক বা রিসোর্ট মোজাফ্ফার গার্ডেন রয়েছে রইচপুর এলাকায়। ফলে শহর এবং আশপাশের বহু মানুষের বিনোদন বা চলাচলের মাধ্যম হচ্ছে রইচপুর সেতু। কিন্তু তিন বছরেও মাত্র ৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি সেতু নির্মাণ শেষ হলো না, এটি আসলে মানতে কষ্ট হয়।’
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জান বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ছয় মাসের মধ্যে সেতুটি নির্মাণ শেষ করার জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে গত সপ্তাহে। এর ব্যত্যয় ঘটলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।