♦দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন রোধে প্রয়োজন সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য
বাংলার ভোর প্রতিবেদক
সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধু নির্দেশ দিয়েছিলেন তোমাদের যার যা কিছু তাই নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ো। তিনি চেয়েছিলেন দেশটা সোনার বাংলা হোক। কিন্তু নাগরিকের নিস্ক্রিয়তার কারণে দেশ ও জাতি বিপর্যের দিকে যাচ্ছে। দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন রোধে প্রয়োজন সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য। বাংলাদেশের রাজনীতি ও নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী ও জবাবদিহিমূলক করার জন্য আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। শনিবার দুপুরে যশোর জয়তী সোসাইটি মিলনায়তনে সুজনের খুলনা বিভাগীয় কর্মপরিকল্পনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
ড. বদিউল আলম মজুমদার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, ‘আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে?/ তোমার ছেলে উঠলে গো মা রাত পোহাবে তবে!’
সুজন সম্পাদক আরও বলেন, সুজন শুধু সুশাসন গঠনের চেষ্টা করে না, পাশাপাশি সামাজিক সমস্যাগুলি সমাধান করার চেষ্টা করে। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। বর্তমান সময়ে গণতন্ত্রের সব বৈশিষ্ট্য লোপ পেয়েছে। এর ফলে দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন চলছে। এমন অবস্থা অব্যাহত থাকলে তা আরও ভয়াবহ আকার নিতে পারে। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আমাদের উচিত এই ব্যবস্থাকে রোধ করে একটি জবাবদিহিমূলক সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কাঠামো নির্মাণে সবার সক্রিয় ভূমিকা রাখা। তা না হলে দেশটি এক সময় বাস যোগ্য থাকবে না। নির্বাচনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা বদলের প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হলে দেশ ও জাতি বিপর্যয়ের দিকে যাবে। ভালো মানুষদের নিস্ক্রিয়তার কারণে মন্দ লোকেরা কর্তৃত্ব¡ প্রতিষ্ঠা করে। তাই ভালো মানুষদের এখনই সক্রিয় হতে হবে এবং সংগঠিতভাবে কাজ করতে হবে। ভালো মানুষদের সংগঠিত শক্তির বিজয় নিশ্চিত। কারণ মন্দ মানুষদের কোন নৈতিক শক্তি থাকে না। সৎ মানুষের সংগঠিত শক্তি দেখলে তারা পালিয়ে যেতে বাধ্য। আমাদের লক্ষ্য সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা।
সুজনের খুলনা বিভাগীয় কর্মপরিকল্পনা সভায় বিগত বছরের কর্মসূচি পর্যালোচনা ও পরবর্তী করণীয় নিয়ে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে আগত সুজন নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন মতমত প্রদান করেন। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন যশোর জেলা কমিটির সভাপতি অ্যাড. সালেহা বেগম। সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ সরকারের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, সুজনের যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ, মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার ইউনিয়ন সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক, বাঘারপাড়া উপজেলার সভাপতি মোস্তাক মোর্শেদ, খুলনার ইয়োথ লিডার সাধনা ইসলাম, কেশবপুরের সাধারণ সম্পাদক মুনসুর আলি, সাতক্ষীরার নেতা আডভোকেট কাজী আব্দুল্লাহ, খুলনার সহ সভাপতি এসএম সোহরাব হোসেন, বাঘারপড়ার সুজন সদস্য দিলরুবা পারভিন, খুলনার সদস্য শেখ আইনুল হক, যশোর সদরের সদস্য জসিম উদ্দীন, মণিরামপুরের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান, বাঘারপাড়ার আমেনা খাতুন, সাতক্ষীরা কালীগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাশ বাচ্চু, খুলনা মহানগরীর সদস্য সচিব কুদরত ই খুদা, বাগেরহাটের সভাপতি অ্যাডভোকেট শরিফুল ইসলাম ঠান্ডু, কুষ্টিয়ার সভাপতি গোলাম রসুল বাবলু, নড়াইলের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজা রহমন লবি, ঝিনাইদহ জেলার নজরুল ইসলাম, মেহেরপুরের সৈয়দ জাকির হোসেন এবং মণিরামপুরের মো: আব্বাস উদ্দীন এবং আরো আলোচনা করেন সাতক্ষীরা জেলা সভাপতি সুভাষ চন্দ্র সরকার, সুজনের খুলনা আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মাসুদুর রহমান রঞ্জু প্রমুখ।
সভায় সুজনের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা কমিটির পরলোকগত নেতৃবৃন্দ ও দেশ বরেণ্য ব্যক্তিবর্গের স্মরণে শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন সুজনের যশোর অঞ্চলের সমন্বয়কারী মো: খোরশেদ আলম। পরে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় এক মিনিটি নিরাবতা পালন করা হয়। এ সময় বিগত এক বছরে সুজনের বিভিন্ন কার্যক্রম, অর্জন ও উদ্দেশ্য তুলে ধরেন সুজনের কেন্দ্রীয় সহযোগী সমন্বয়কারী হাফিজুর রহমান হাফিজ। সভায় নেতৃবৃন্দ তাদের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের আগামী একবছরের কার্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেন। কার্যক্রমটি বাস্তবায়নে বিশেষ ভূমিকা রাখেন অধীশ দাশ, মো. আশরাফুজ্জামান, গিয়াস উদ্দীন, রুবিনা আক্তার, রাসেল, সঞ্জয়, হেলাল এবং সানজিনা হক প্রমুখ। সভায় খুলনা বিভাগের সকল জেলা ও উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকসহ দেড় শতাধিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।