বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের ঈদবাজারে রকমারি ডিজাইনের সব পাঞ্জাবির পসরা সাজানো হয়েছে। গরমের ভেতর ঈদ, এটি বিবেচনায় রঙ ও কাপড়েও আনা হয়েছে বৈচিত্র। গরম বিবেচনায় আরামদায়ক কাপড়ের পাঞ্জাবি সংগ্রহে রেখেছেন বিক্রেতারা। তারা বলছেন, গরমের কারণে হালকা রঙ ও কম কাজ করা সুতি পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি। পাঞ্জাবির নকশায় গত বছর থেকে এ বছর একটু বেশি আধিক্য দেখা যাচ্ছে। ছোট ছোট ফুল, বুকের দিকে হালকা কাজ। এক রঙের পণ্য বেশি, তবে ছাপা নকশার পাঞ্জাবিও চলছে।
যশোরের দোকানগুলোতে এক রঙের কাপড়ে হাতা ও গলায় কাজ করা পাঞ্জাবির সংখ্যা বেশি। সাদা কাপড়ে সাদা সুতায় নকশা করা পাঞ্জাবিও আছে। এক রঙের কাপড়ে হাত ও গলায় হাল্কা নকশার পাঞ্জাবির প্রতি ক্রেতার আগ্রহ বেশি এমনটাই জানালেন ব্যবসায়ীরা। গরমের কারণে এবার সুতি কাপড়ে তৈরি পাঞ্জাবির সংগ্রহ বেশি। তবে হাফসিল্ক, ব্লেন্ডেড সিল্ক, মেশানো সুতি, জর্জেটের পাঞ্জাবিও মিলবে। এবার জামদানি ও ফুলের নকশায় অনুপ্রাণিত সংগ্রহ ক্রেতাদের নজর কাড়বে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। অনেকেই বাচ্চাদের জন্য পাঞ্জাবির সঙ্গে মিলিয়ে কিনছেন কোটিও। বাবার সঙ্গে মিল রেখে একই রকম পাঞ্জাবি কিনছেন ছেলের জন্য।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সিল্ক, লিলেন, রেমি কটন, ফাইন কটন, কটনের পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি। গত বছরের মতো এবারও ডিজিটাল প্রিন্টের পাঞ্জাবি চাহিদা রয়েছে। পাঞ্জাবির সামনে এমব্রয়ডারি, সুই-সুতার ভারি কাজের দেখা মিলছে বেশি। তা ছাড়া এবার জমকালো কাজের পাঞ্জাবিও রয়েছে অনেক। প্রতি পিস রঙিন ও সাদা পাঞ্জাবির দাম সর্বনিম্ন ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত, তবে খাদি কাপড়ের মধ্যে হাতে নকশা করা পাঞ্জাবির দাম একটু বেশি। সাশ্রয়ী দাম আর আরামদায়ক হওয়ায় চাহিদা তুঙ্গে রয়েছে সুতি পাঞ্জাবি বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
যশোরের বাজারে বিভিন্ন রঙ ও ডিজাইনের সুতির পাঞ্জাবি ৭শ’ থেকে ৩ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। কারুকাজ করা শর্ট পাঞ্জাবি ও লং পাঞ্জাবি ৯শ’ থেকে ২ হাজার টাকা দাম। মটকা ও সিল্কের পাঞ্জাবি ২ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা। বাজার ঘুরে দেখা গেছে কটন প্রিন্টেড পাঞ্জাবী ১ হাজার ২৯৯ টাকা, কটন এমব্রয়ডারি পাঞ্জাবি ১ হাজার ৪৫০ টাকা, কটন এমব্রয়ডারি পাঞ্জাবি ১ হাজার ৪৫০ টাকা, প্রিন্টেড কটন পাঞ্জাবি ৯৯৯ টাকা, সফট কটন এমব্রয়ডারি পাঞ্জাবি (সাথে পায়জামা ফ্রি) এক হাজার ২৮০ টাকা।
কালেক্টরেট মসজিদ মার্কেটের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন, এবারের ঈদ গরমে হওয়ায় সুতির পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি। আরামদায়ক বলে ক্রেতারা এটাই বেছে নিচ্ছেন।
আবুল হোসেন নাম এক ক্রেতা বলেন, ঈদে পুরুষদের কাছে পাঞ্জাবির কদর বেশি। পাঞ্জাবি পরে সবাই ঈদের নামাজে অংশ নেন। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়।
স্কুল শিক্ষক রাসেল হোসেন বলেন, ঈদে পুরুষের প্রথম পছন্দ থাকে পাঞ্জাবি। ঈদের নামাজ থেকে শুরু করে আত্মীয়-স্বজনের বাসায় বেড়াতে যাওয়াসহ সবখানেই পাঞ্জাবি যেন অত্যাবশ্যক। তাই পাঞ্জাবি কিনতে চলে আসলাম।
বিক্রেতারা বলছেন, এবার মান ও ডিজাইন ভেদে প্রতিটি সুতি পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে ১ থেকে ৩ হাজার টাকায়। বেশি দামের পাঞ্জাবি থাকলেও চাহিদা বেশি এক থেকে দুই হাজার টাকার পাঞ্জাবির।
তরুণ উদ্যোক্তা আব্দুর রহিম বলেন বলেন, খাদি পাঞ্জাবির চাহিদা তরুণদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে। ঈদ উপলক্ষে ইতিমধ্যে প্রায় দেড় হাজারের অধিক পাঞ্জাবি বিক্রি করেছি, যা অন্যবছরের তুলনায় এবার দ্বিগুণ।
ঈদে বড়দের চেয়ে ছোটদের আগ্রহ যেহেতু কম নয়, তাই বড়দের সঙ্গে সঙ্গে ছোটদের আয়োজনেও সমান গুরুত্ব দিয়ে দোকানে ছোটদের আকর্ষণীয় পোশাক রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।