বাংলার ভোর প্রতিবেদক
দীর্ঘ ১৫ বছর পর আজ শনিবার যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন। তবে দলের শীর্ষ নেতাদের পছন্দে নয়; তৃণমূল কর্মীদের ভোটের মাধ্যমে হবে এই সম্মেলন। যাতে শীর্ষ চার পদে দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১০ প্রার্থী। দেড় দশক পর ভোটের মাধ্যমে এই এ নির্বাচন হওয়ায় কাউন্সিলর, নেতা, কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বইছে বাড়তি উৎসাহ-উদ্দীপনা। কাউন্সিলরদের মন জয় করতে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা দিনরাত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন। নির্বাচনের ব্যাপারে কাউন্সিলররা সরাসরি মুখ না খুললেও তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া গেছে। যদিও রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দলীয় কোন্দলে জর্জারিত এ উপজেলার নেতাকর্মীরা। সম্প্রতি দু’গ্রুপের সংঘর্ষের জেরে স্থগিতও করা হয় বর্তমান কমিটি।
উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের ৭শ’ ৮১জন কাউন্সিলর গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করবেন। ঝিকরগাছা বদরুদ্দিন হাই স্কুলে আজ শনিবার সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কশিশনার ও জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু। এদিন প্রধান তিনটি পদে ভোট গ্রহণ করা হবে।
এবারের নেতা নির্বাচনে সভাপতি পদে ২ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে ৩ জন ও ২টি সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তার মধ্যে দুইটি প্যানেল সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ৮ জন এবং আরেকটি প্যানেলে সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দুইজন ভোট প্রার্থনা করে বেড়াচ্ছেন। সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা বিএনপির স্থগিত হওয়া কমিটির আহবায়ক মোর্তজা এলাহী টিপু। তার প্যানেলে রয়েছেন সাধারণ সম্পাদক পদে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক ইমরান হাসান সামাদ নিপুন, সাংগঠনিক সম্পাদক উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি গোলাম কাদের বাবলু ও উপজেলা কৃষকদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক। অপর প্যানেলে রয়েছেন, সভাপতি পদে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সাবিরা সুলতানা। এ প্যানেলে তার সাথে সাধারণ সম্পাদক পদে উপজেলা বিএনপির স্থগিত হওয়া কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক খোরশেদ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে পানিসারা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী আব্দুস সাত্তার ও পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদুন্নবী মুরাদ রয়েছেন। এদিকে, সাধারণ সম্পাদক পদে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-সম্পাদক আশফাকুজ্জামান খান রনি ও সাংগঠনিক সম্পাদক উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মরহুম জালাল উদ্দিন আহম্মেদের ছেলে মো. শাহিন আহম্মেদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নেতা নির্বাচনের বিষয়ে বাঁকড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আকবর বলেন, ভোটের মাধ্যমে এমন নেতাকে বেছে নিতে হবে, যিনি বিগত দিনে দুঃসময়ে নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন। কেউ যদি অন্য কোনভাবে প্রভাবিত হয়ে নেতা নির্বাচনে ভুল করেন তাহলে বিএনপির জন্য দুঃসংবাদ হবে। হাজিরবাগ ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ও চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান বলেন, অবশ্যই আমরা (ভোটাররা) যোগ্য নেতাকে বেছে নেব।
সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সাবিরা সুলতানা জয়ের ব্যাপারে ৯৯ ভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আমার স্বামী নাজমুল ইসলামের মৃত্যুর পর থেকে নেতাকর্মীদের বিপদে-আপদে সবসময় পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। কাউন্সিলররা আমাকেই বেছে নেবে বলে আমার বিশ্বাস। সভাপতি পদে অপর প্রতিদ্বন্দ্বি মোর্তজা এলাহী টিপুও জয়ের ব্যাপারে আশা ব্যক্ত করে বলেন, গত চার দশক ধরে দলের সাথে আছি। এ সময়ে কাউন্সিলরদের ভোটে তিনবার সাধারণ সম্পাদক ও একবার আহবায়ক নির্বাচিত হয়েছি। দলের দুর্দিনে-দুঃসময়ে নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম। তারা ব্যালটে তা প্রমাণ করবে।
যাই হোক, এ নির্বাচনে আগামী দিনে দল পরিচালনার জন্য কাউন্সিলররা ভোটের মাধ্যমে কাদের বেছে নেন তা এখন অপেক্ষার পালা।