প্রতিবেদক
এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় মা বাবার বকুনিতে অভিমান করে বাড়ি ছাড়েন ইদ্রিস আলী মোল্যা। বাড়ি ফেরার জন্য সাজান অপহরণ নাটক। অবশেষে ছয় বছর পর তাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।গত মঙ্গলবার নরায়নগঞ্জের রুপগঞ্জ থানাধীন প্রিমিয়ার স্টীল মিল থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। আদালতের মাধ্যমে পরিবারে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে ইদ্রিস আলী মোল্যাকে (২৩)। তিনি যশোরের কেশবপুর উপজেলার সারুটিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে ।
বৃহস্পতিবার রাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন বলেন, এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া বাবা মা তাকে বকাঝকা করে। তখন ভিকটিম ইদ্রিস আলী মোল্যা তার বাবা মায়ের উপর রাগ করে কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি থেকে চলে যায়। ২০১৯ সালে ভিকটিম তার পরিবারের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করেন। সে নারায়নগঞ্জ থাকেন বলে পরিবারকে জানান। ভিকটিম বছরে কয়েক বার বিভিন্ন নম্বর থেকে তার বাবা-মাকে ফোন দিতেন। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও ভিকটিম তার বাবা-মা, ভাই-বোন বা আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সাক্ষাত না করায় তারা সবাই উদ্বিগ্ন উৎকন্ঠায় থাকতেন। গত বছরের ৩০ জুন সকাল ১০ টা ৪৬ মিনিটের দিকে ভিকটিম ইদ্রিস আলী তার ছোট ভাইয়ের মোবাইল নম্বরে ফোন করে জানায় নারায়ণগঞ্জ থেকে বাড়িতে আসছে। ভিকটিমের পরিবারের সদস্যরা তাকে রিসিভ করার জন্য কেশবপুরের মোহনপুর বাসস্টান্ডে অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে বিকাল হলেও ভিকটিম আর আসে না। এরপর গত বছরের ৪ জুলাই অজ্ঞাত মোবাইল নম্বর থেকে ভিকটিমের ভাইয়ের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে ফোন করে অজ্ঞাত ব্যক্তি জানায় ইদ্রিস আলীকে খোঁজাখুজির দরকার নাই, সে ভালো আছে। তার সাথে কথা বলতে হলে দুই লাখ টাকা দিতে হবে। পরবর্তীতে ১৩ জুলাই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ইদ্রিস আলীর ব্যবহৃত ‘‘স্পন্দিত চাদর’’ নামের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে পুনরায় দুই লক্ষ টাকা দিলে ইদ্রিস আলীকে ছেড়ে দেওয়া হবে জানায়। তখন তার পরিবারের লোকজন তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার সকল মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর ভিকটিমের পরিবারের লোকজন তাদের সন্তানকে উদ্ধারের জন্য যশোর পিআইবি পুলিশ সুপার বরাবরে আবেদন করে। তখন ভিকটিমের পরিবার ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে পিবিআই মামলাটির তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ থানাধীন প্রিমিয়ার স্টিল মিল থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করে। ৭ ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপন করা হলে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক জবানবন্দি প্রদান করেন। ভিকটিম ইদ্রিস আলী এসএসসি পরীক্ষায় আশানুরুপ ফলাফল না করায় তার বাবা-মা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা তার বকাঝকা করে। রাগে ক্ষোভে মনোকষ্টে ইদ্রিস আলী নিজে থেকেই বাড়ি থেকে চলে যায়। সে নিজে নারায়ণগঞ্জে আত্মগোপনে ছিল এবং সেখানে তার পরিচয় গোপন করার জন্য তার প্রকৃত নাম ঠিকানা গোপন করে হুসাইন নামে পরিচয় দেয়। তাকে কেউ অপহরণ করেনি বা মুক্তিপণ চাইনি। পরিবারের প্রতি রাগে ক্ষোভে ইদ্রিস আলী নিজেই তার ভাইকে ফোন করে বাড়ি আসার নাটক সাজিয়েছিল। তবে বর্তমানে ইদ্রিস আলী তার বাবা-মা অর্থাৎ পরিবারের সাথে থাকার ইচ্ছা পোষন করে। এখন তার পিতা-মাতার সাথে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছে।
শিরোনাম:
- যশোর জেনারেল হাসপাতালে দুদকের অভিযান
- যশোরে বেড়েছে খুন-ধর্ষণ, আইনশৃংখলা উদ্বেগজনক
- যশোরে দ্বন্দ্ব সংবেদনশীলতা ও রূপান্তর বিষয়ক কর্মশালা শুরু
- জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ নড়াইলকে দুই গোল যশোরের
- এবার যশোরে ৭০৫টি শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি
- সুন্দরবনের সাগরে নিখোঁজ মাহিদের মরদেহ উদ্ধার
- শ্যামনগর ইউএনও’র বদলি আদেশ প্রত্যাহার দাবিতে মানববন্ধন
- মানসিক সুস্থতা এবং আসক্তি প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম