গোপাল ঘোষ
যশোরের হাট-বাজারে সবজির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অনেকটাই কমে এসেছে। তবে পাইকারি ও খুচরা বাজারে বিস্তর ব্যবধানে বেচা-কেনা চলছে। এতে খুচরা বিক্রেতারা বিপুল পরিমাণে লাভবান হলেও ঠকছেন সাধারণ ভোক্তা। এরপরও কিছুটা দাম কমে আসায় স্বস্তি ফিরেছে ভোক্তাদের।
বিগত এক মাস ধরে যশোরে শীতের সবজি বিপুল পরিমাণে আমদানি হলেও প্রভাব পড়েনি বাজারে। মৌসুমের শুরুর মতোই বাড়তি দামে সবজি কিনছিলেন ক্রেতারা। তবে এ সপ্তাহে কমতে শুরু করেছে শীতের সবজির দাম।
যশোরে গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় সব ধরনের সবজির দামই কমেছে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। এতে স্বস্তি ফিরেছে ক্রেতাদের মাঝে।
গতকাল যশোরে বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নতুন আলু কাঠিনাল ও সাদা হল্যান্ড ৩০-৩৫ টাকা কেজি এবং গুটি লাল আলু ৩৫-৪০ টাকা কেজিতে খুচরায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ২৪ ও ৩০ টাকা। বেগুন খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি, পাইকারিতে ২০ টাকা। গত সপ্তাহেও ৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। পাকা টমেটো আকার ভেদে ৩০ ও ৪০ টাকা। ফুলকপি ও পাতাকপি খুচরা বাজারে ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও পাইকারিতে ১০ টাকা। সিম প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা যা গত সপ্তাহে ছিল ৭০ টাকা, তবে বিঁচিযুক্ত সিম প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, লাউ প্রতি পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা আগে ছিল সর্বনিম্ন ৬০ টাকা। মিস্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, করোলা প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, কাঁচা কলা প্রতি হালি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ব্রুকলি প্রতি পিস ৪০ টাকা, শালগম প্রতি কেজি ৪০ টাকা এবং শসা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৩০ টাকা এবং পেঁয়াজের ফুল প্রতি আঁটি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাল শাক, সবুজ শাক ও পালং শাক বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকা আঁটি দরে।
গত দুদিনে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা। বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা দরে, যা ছিল ৭০-৮০ টাকা। আর গত এক সপ্তাহে বেড়েছে ৪০ টাকা। তার আগের সপ্তাহে কেজি ছিল ৮০ টাকার মধ্যে।
পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, মুড়ি কাটা পেঁয়াজের মৌসুম শেষ। বেশির ভাগ এলাকার কৃষকরা ওই পেঁয়াজ তুলে ফেলেছেন। আর হালি পেঁয়াজের ভরপুর মৌসুম শুরু হতে কিছুদিন বাকি রয়েছে। মাঝখানের এ সময়ে চলছে সরবরাহ ঘাটতি। যে কারণে বাজারে দাম বাড়ছে।
এদিকে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি না থাকায় কয়েক মাস ধরে আগাম জাতের এ পেঁয়াজ দিয়ে চাহিদা মেটানো হচ্ছে। ফলে দেশীয় এ পেঁয়াজের সরবরাহ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
অন্যান্য বছরের এ সময়ের সঙ্গে তুলনা করলে এখন পেঁয়াজের দর থাকার কথা ৩০ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে। কিন্তু সে চিত্র এখন আর নেই। এত চড়া দামে পেঁয়াজ কিনতে বিরক্ত ক্রেতারা। তাদের বেশির ভাগ পেঁয়াজের এ বাড়তি দামে উষ্মা জানিয়েছেন।
বাজার করতে আসা ক্রেতা সুমন জানান, এক সপ্তাহ আগেও বাজারে ৫০-৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যায়নি। এখন দাম কমায় বাজার করে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে। তবে এখনও কয়েকটি সবজির দাম কমেনি বলে জানান তিনি।
সবজির দাম আরও কমতে পারে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। বাজারে সবজি বিক্রেতা বছির বলেন, একই ধরনের শীতের সবজির চাহিদা কমার সঙ্গে সরবরাহ বাড়ায় আমরা কম দামে বিক্রি করতে পারছি। তবে পাইকারি ও খুচরা বাজারে দামের ব্যবধান কেন দ্বিগুণ এ প্রশ্নের কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
পাইকারি বিক্রেতা কাজী মনা বলেন, আমরা কৃষকের কাছ থেকে যে দামে কিনি, তার চেয়ে সামান্য কিছু লাভে খুচরা বিক্রেতার কাছে বিক্রি করি।
খুচরা বাজারে দ্বিগুণ দাম প্রসঙ্গে তিনি জানান, সাধারণ ক্রেতারা দাম কমার বিষয়টি না জানার কারণে খুচরা বিক্রেতারা সুযোগ নিচ্ছে।
অন্যদিকে বাজারে কমেনি ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। বাজারভেদে বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা দরে। যা দুই সপ্তাহ আগে আরও ১০-১৫ টাকা কম ছিল। একই ভাবে কিছুটা বাড়তি দামে ব্রয়লার মুরগি ২১০ থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
শিরোনাম:
- একই সঙ্গে দুই কলেজের অধ্যক্ষ জাহিদুলের নজিরবিহীন দুর্নীতি
- অভয়নগরকে হারিয়ে ফাইনালে কালীগঞ্জ
- অফিস সহকারী পদে হেলালের এমপিওভুক্তি নিয়ে লুকোচুরি
- শিক্ষার মান উন্নয়নে ভালো শিক্ষক দরকার
- উপশহর টিচার্স ট্রেনিং কলেজের শিক্ষা সফর অনুষ্ঠিত
- ‘বিজ্ঞানমনস্ক প্রজন্ম গড়তে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে’
- যশোরে নতুন আঙ্গিকে ব্রাদার্স ফার্নিচার শো রুম উদ্বোধন
- আলুর দাম লাগামহীন ভোক্তার নাভিশ্বাস