বাংলার ভোর প্রতিবেদক
ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারক যশোর জেলা পরিষদ ভবনসহ সকল ঐতিহ্য রক্ষার দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে যশোরের জেলা প্রশাসক বরাবর এ স্মারকলিপি প্রদান করেন জনউদ্যোগ যশোরের নেতৃবৃন্দ।
স্মারকলিপিতে যশোরের ঐতিহ্য রক্ষায় জেলা পরিষদ ভবন, পরিত্যক্ত রেজিস্ট্রি অফিস ভবনসহ জজকোর্ট ভবন, পৌর সভার জলকল, পুলিশ সুপারের ভবন রক্ষার দাবি জানানো হয়েছে। স্মারকলিপি গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার। এ সময় তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যাপারে নেতৃবৃন্দকে আশ্বস্ত করেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে- সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের ধারক-বাহক যশোর। এ জেলার বয়স ২৪৩ বছর। যশোর এমন সব ইতিহাস-ঐতিহ্যের অধিকারী যা বাংলাদেশ তো বটেই যুক্ত বাংলার অন্য কোন জেলায় নেই।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়েছে- যশোর জেলা পরিষদ ভবনটি যুক্ত বাংলার প্রথম জেলা যশোরের দ্বিতীয় প্রশাসনিক ভবন। ১৯১৩ সালে ভবনটি নির্মিত হয়। ২০১৯ সালে জেলা পরিষদ ভবনটি একবার ভাঙার উদ্যোগ নেয়। সে সময় যশোরবাসীর আন্দোলনের মুখে সিদ্ধান্তটি প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু পাঁচ বছরের মাথায় এসে ফের ভবনটি ভাঙার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যা ইতিহাস-ঐতিহ্য বিরোধী সর্বনাশী সিদ্ধান্ত।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে- জেলা পরিষদ ভবনটি সংস্কারের প্রয়োজন হতে পারে; সেক্ষেত্রে মূল নকশা অপরিবর্তিত রেখে সংস্কার করে ভব্যিষৎ প্রজন্মকে যশোরের ইতিহাস জানার সুযোগ দেওয়া উচিত বলে মনে করি।
যশোর এক সময় রাজ্য ছিল। এই উপমহাদেশে যশোরকে সর্বপ্রথম জেলায় উন্নীত করা হয়। বাংলাদেশে সর্বপ্রথম আধুনিক প্রশাসনিক ব্যবস্থা চালু হয় যশোরে। আর এই ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য যশোরেই স্থাপিত হয় সর্বপ্রথম দফতরটিও।
২২৩ বছরের এই ঐতিহাসিক ভবনটি (বর্তমান জেলা রেজিস্ট্রি অফিস) যশোরের প্রশাসনিক ব্যবস্থা পরিচালনার প্রথম ভবন। এটি ক্ষয়িষ্ণু স্মৃতি হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই ঐতিহাসিক ভবনটি ক্ষয়িষ্ণু অবস্থা থেকে রক্ষা করার দাবি জানাচ্ছি।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন জনউদ্যোগ যশোরে আহ্বায়ক প্রকৌশলী নাজির আহমদ, প্রবীণ সাংবাদিক বীরমুক্তিযোদ্ধা রুকুনউদ্দৌলাহ্, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র যশোর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রমিক নেতা মাহবুবুর রহমান মজনু, সিপিবি যশোর জেলা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন, প্রেসক্লাব যশোরের যুগ্ম সম্পাদক হাবিবুর রহমান মিলন, জনউদ্যোগ সদস্য অ্যাডভোকেট সৈয়দা মাসুমা বেগম, প্রাইডের নির্বাহী পরিচালক উজ্জ্বল কুমার বালা, দৈনিক রানারের ডেপুটি এডিটর প্রণব দাস, আইইডি যশোর কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক বীথিকা সরকার, জনউদ্যোগ যশোরের সদস্য সচিব কিশোর কুমার কাজল প্রমুখ।