সাতক্ষীরা সংবাদদাতা
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. শীতল চৌধুরীর বিরুদ্ধে ওষুধ কেনার ৭ কোটি টাকা আত্মসাতসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ (রোববার) বেলা ১১টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে জেলা ভূমিহীন সমিতির আয়োজনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা ভূমিহীন সমিতির সভাপতি কওছার আলীর সভাপতিত্ব মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, ভূমিহীন সমিতির সহ-সভাপতি মফিজুর রহমান, শওকত আলী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ, নদী বন ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির সভাপতি আদিত্য মল্লিক, বাবলু হাসান, নারী নেত্রী নদীসহ অন্যরা।
বক্তারা বলেন, হাসপাতালের পরিচালক ডা. শীতল চৌধুরী সপ্তাহে মাত্র দুই দিন অফিস করেন। ঠিকমত অফিসে আসেন না। অথচ সরকারি আইন অনুযায়ী কোন সরকারি কর্মকর্তা বিনা ছুটিতে কর্মস্থল ছাড়তে পারবেন না। সে আইন তিনি মানেন না। পরিচালক ডা. শীতল চৌধুরী, অতিরিক্ত পরিচালক ডা. অজয় কুমার এবং ল্যাব ইনচার্জ সুব্রত কুমার দাস সিন্ডিকেট করে হাসপাতাল পরিচালনা পরিষদের সাথে যোগসাজস করে লুটপাট চালাচ্ছে। বর্তমানে হাসপাতালের স্টাফদের বেতন ছাড়াতে গেলেও টাকা দিতে হয়। ফলে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ। সাতক্ষীরা মেডিকেল হাসপাতালের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একেবারে নাজুক হয়ে পড়েছে। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ, দুর্গন্ধে রোগীরা আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
প্যাথলজিস্ট সুব্রত কুমারের সহযোগিতায় হাসপাতালে গড়ে উঠেছে বড় একটি সিন্ডিকেট। এছাড়া হাসপাতালের রোগীদের খাদ্যে বড়ধরনের অনিয়ম করেছে ঠিকাদারসহ তার সহযোগীরা। খাদ্যের মান নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে। গরুর মাংসের পরিবর্তে পোল্ট্রি, রুই মাছের পরিবর্তে তেলাপিয়া তাও আবার ছোট একটুকরো সরবরাহ করা হয়। মেডিকেলের ল্যাব, এক্স-রে বিভাগ এবং কেবিন ভাড়া থেকে প্রতি সপ্তাহে মোটা অংকের টাকা পরিচালকের হাতে তুলে দিতে হয়। তা না দিলে বিভাগ পরিবর্তন করে দেয়ার হুমকি ধামকিও প্রদর্শন করেন পরিচালক।
এছাড়া হাসপাতালের ওষুধ কেনার জন্য বরাদ্দ হওয়া ৭ কোটি টাকার কোন ওষুধ না কিনে পুরো টাকায় তিনি আত্মসাত করেছেন। এদিকে, গত ৭ মার্চ মেডিকেল হাসপাতালের অডিট কার্যক্রম শেষ হয়। ঢাকা থেকে আসা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা প্রায় চার দিন ধরে অডিট কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। ওষুধ বিক্রির ৭ কোটি টাকা আত্মসাতসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ধামাচাপা দিতে দুর্নীতিবাজ শীতল চৌধুরী ওই কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করতে সুন্দরবন ভ্রমণসহ জেলার নামিদামি হোটেলে ভুরিভোজের মত আপ্যায়ন অব্যাহত রেখেছেন। বক্তারা অবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।