বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর জেনারেল হাসপাতালে বয়স নির্ণয়ের নামে ভুক্তভোগীদের হয়রানি করা হচ্ছে। দাবিকৃত উৎকোচ না দেয়ায় গত দুইদিন ধরে সুজিৎ কুমার দাসকে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সুজিৎ কুমার দাস শহরের পূর্ববারান্দিপাড়ার বাসিন্দা।
সুজিৎ কুমার অভিযোগে জানিয়েছেন, তিনি পারিবারিকসহ বিভিন্ন কারণে দীর্ঘদিন জন্ম নিবন্ধন করতে পারেননি। বর্তমানে তিনি জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয় পত্র ও পাসপোর্ট করার জন্য আবেদন করবেন। এ জন্য তার বয়স নির্ণয় করা প্রয়োজন। বয়স নির্ণয়ের জন্য তিনি ২৫ মার্চ সিভিল সার্জন বরাবর আবেদন করেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে সিভিল সার্জনের দপ্তর থেকে ১০৮৪ (২) স্মারকে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক বরাবর চিঠি দেয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয় পত্রের মর্মানুযায়ি নির্ধারিত বোর্ডের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আবেদনকারির প্রকৃত বয়স নির্ধারণ পূর্বক একটি প্রতিবেদন সিভিল সার্জন কার্যালয়ে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হলো। কিন্তু সুজিৎ কুমার দাস জেনারেল হাসপাতালে গেলে বয়স নির্ণয় বোর্ডের সভাপতি ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডা. আনোয়ার হোসেন, রেডিওলজিস্ট ডা. আবু সাইদ ও দাঁতের ডা. সাবিহা তানজিম এই তিনজন একত্রিত হয়ে বয়স নির্ণয়ের জন্য সুজিতের কাছে ৬০ হাজার টাকা উৎকোচ দাবি করেন। সুজিত উৎকোচ দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় বয়স নির্ণয় না করে তাকে ভারতীয় নাগরিক বলে প্রচার করে হয়রানি করছে। অথচ সুজিৎ শহরের বারান্দিপাড়ার বাসিন্দা। প্রায় ৩৫ বছর ধরে সুজিৎ বারান্দিপাড়ায় বসবাস করেন।
১ নং ওয়ার্ড বারান্দিপাড়ার কাউন্সিলর সাইদুর রহমান ওরফে রিপন সুজিৎ বারান্দিপাড়ার বাসিন্দা এই মর্মে প্রত্যয়ন ও নাগরিক সনদ দিয়েছেন। কিন্তু তারপরও হাসপাতালের বয়স নির্ণয় কমিটির সভাপতি ভারপ্রাপ্ত আরএমও আনোয়ার হোসেন মানতে নারাজ সুজিৎ বাংলাদেশি নাগরিক। যে কারণে তিনি সুজিৎকে নির্বাচন অফিস থেকে প্রত্যয়ন আনতে বলেছেন।
অথচ নির্বাচন অফিস থেকে নাগরিকের কোন প্রত্যয়ন দেয়া হয় না। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে জেলা নির্বাচন অফিসার আনিসুর রহমানকে ফোন করলে তিনি জানান, নারিকত্বের প্রত্যয়ন দেয় স্থানীয় সরকার। নির্বাচন অফিস থেকে কোন প্রত্যয়ন দেয়ার নিয়ম নেই।
এ বিষয়ে জানার জন্য হাসপাতালের তত্বাবধায়ক হারুনর রশিদকে রোববার দুপুরে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। আগের দিন শনিবার ভারপ্রাপ্ত আরএমও আনোয়ার হোসেনকে ফোন করে বয়স নির্ণয় না করার কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সুজিৎকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। আর কিছু জানতে চাইলে আপিন অফিসে আসেন। এ ব্যাপারে হয়রানির শিকার সুজিৎ জেলা প্রশাসকসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।