বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের কেশবপুর পৌরসভার গার্ভেজ ট্রাক চালক নাজমুল হোসেনকে মারপিট করার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম কেশবপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে পৌর পরিষদ ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে পৌর শহরের ৫টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তোরণ নির্মাণ করা হয়। এসব তোরণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সজিব ওয়াজেদ জয়, শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি ও মেয়র রফিকুল ইসলামের ছবি সম্বলিত প্যানা লাগানো হয়। শনিবার দুপুরে জেলা পরিষদের সদস্য টিপু সুলতান ও রকির নেতৃত্বে ওই প্যানা নামিয়ে পদদলিত করা হয়। পরে তারা পৌরসভার গার্ভেজ ট্রাক চালক নাজমুল হোসেন ও ডেকোরেটর মালিক পবিত্র সাহাকে শহরের বকুলতলা এলাকায় ডেকে নিয়ে মারপিট করে।
অভিযোগ উঠেছে, গার্ভেজ ট্রাক চালক নাজমুল হোসেন ও ডেকোরেটর মালিক পবিত্র সাহাকে শনিবার দুপুরে ডেকে নিয়ে শহরের কোথাও মেয়রের তোরণ, ব্যানার-ফ্যাস্টুন থাকবে না বলে টিপু সুলতান ও রকির নেতৃত্বে মারপিট করা হয়। এ ঘটনায় পবিত্র সাহা থানায় অভিযোগ দিলে পরবর্তীতে মামলা রেকর্ড হয়। জেলা পরিষদের সদস্য টিপু সুলতানকে এক নম্বর আসামি করে রকি, এরশাদসহ ৫/৭ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা রুজু করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করেছেন। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, পৌরসভার বাজিতপুর এলাকার দেলোয়ার হোসেন রকি (২৮) ও তেঘরি এলাকার এরশাদ মোড়ল (৩০)।
সংবাদ সম্মেলনকালে উপস্থিত ছিলেন, পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন, প্যানেল মেয়র মনোয়ার হোসেন মিন্টু, কাউন্সিলর আতিয়ার রহমান, কামাল হোসেন খান, আব্দুল হালিম, খাদিজা খাতুনসহ পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এদিকে এ ঘটনায় রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পরিচ্ছন্নকর্মীরা কাজ বন্ধ রেখে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। তারা ময়লা ফেলার গাড়ি ও সরঞ্জাম নিয়ে কেশবপুর প্রেসক্লাবের সামনে ওই অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। ফলে শহরের বিভিন্ন স্থানের ময়লা-আবর্জনা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে।
ডেকোরেটর মালিক পবিত্র সাহা বলেন, ‘আমাকে দোকান থেকে মুঠোফোনের মাধ্যমে ডেকে নিয়ে জেলা পরিষদের সদস্য টিপু সুলতান ও রকি নামের এক যুবক মারপিট করে। ঘটনা উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। এর সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত সমস্ত ডেকোরেটরের কাজ বন্ধ রাখা হবে’।
গার্ভেজ ট্রাক চালক নাজমুল হোসেন বলেন, ‘শহরের কোথাও মেয়রের তোরণ, ব্যানার-ফ্যাস্টুন থাকবে না বলে ওরা আমাকে মারপিট করে। আমি রোজা রেখেছি জানালেও তারা মারপিট করতে থাকে’।
অভিযোগের বিষয়ে জেলা পরিষদের সদস্য টিপু সুলতান বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে সেটি সঠিক নয়। আমি কাউকে মারপিট করিনি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে’।
এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল আলম বলেন, ডেকরেটর মালিক পবিত্র সাহার অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় মামলা রুজু হয়েছে। এই ঘটনায় দুই জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি টিপু সুলতান পলাতক রয়েছে। তাকে আটকে পুলিশের অভিযান অব্যহত রয়েছে