শ্যামনগর প্রতিনিধি
দেশের উপর দিয়ে প্রবাহমান তীব্র তাপপ্রবাহে সাতক্ষীরার উপকূলবর্তী শ্যামনগর অঞ্চলের জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। সেই সাথে দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। আর এ কারণে ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বৃদ্ধ থেকে শিশুরা।
জানা গেছে, বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে শ্যামনগর সদর হাসপাতলে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ভুক্তভোগীরা জানান, পানি এখন আমাদের বিপদ ডেকে আনছে। চারদিকে পানি থাকলেও সুপেয় পানির জন্য হাহাকার করতে হচ্ছে।
পানির জন্য কলসি হাতে দূর-দূরান্তে ছুটছে মানুষ।
শ্যামনগর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মোস্তফিজুর রহমানের তথ্য মতে উপজেলায় সরকারি পানযোগ্য পানির পুকুর আছে ২২টি, পানির ফিল্টার আছে ৬৫৬টি অকেজো রয়েছে ১৮৫টি, গভীর নলকূপ ২ হাজার, অগভীর নলকূপ আছে ৫ শত, আরও মেশিন রয়েছে ৫ টি, সুপেয় পানির সমস্যা সমাধানে পানির ট্যাংক বিতরণ করেছে ৩ হাজার।
কৈখালী, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালীনি, আটুলিয়া, গাবুরা, মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক বছর ধরে এ সমস্যা চলে এলেও এটির স্থায়ী সমাধানের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না।
এলাকার বেশিরভাগ খাল ও পুকুর শুকিয়ে যাওয়ায় কোথাও গোসল এবং খাবারের পানি মিলছে না। লোকজনকে আর্সোনিকযুক্ত নলকূপ, পানা পুকুরের পানি পান করছে। এসব পানি পান করে বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে ভুগছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রচণ্ড গরমে পানি বাহিত রোগ ডায়রিয়া, শাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। কৈখালী গ্রামে শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষেরা ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল ক্লিনিকগুলোতে ভর্তি হয়েছে।
এছাড়া পল্লী চিকিৎসকদের কাছ থেকেও চিকিৎসা নিচ্ছে রোগীরা, কৈখালী গ্রামের পল্লী চিকিৎসক ডা. রুহুল আমীন বলেন, একদিকে অতি তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায়। মাটির তলদেশের ও নলকূপের পানি নোনা। অপরিকল্পিতভাবে খাওয়ার পানির ফিল্টার। পুকুরগুলো সংস্কার করার অভাবে পানিবাহিত ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। গাবুরা গ্রামের হুদা মালী, শাহাদাত হোসেনসহ অনেকে জানান, এই এলাকার পানি লবণাক্ত। সরকারি অনেক জায়গা থাকলে ও সরকারি কোনো পুকুর বা জলাধর না থাকায়। আমারা প্রতিবছর দুই থেকে তিন মাস বিশুদ্ধ খাবার পানির কষ্টে জীবন কাটাতে হয়। বিশুদ্ধ সুপেয় পানি সময় মত পাওয়া যায়না।
শ্যামনগর সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. গাজী তরিকুল ইসলাম বলেন, গরম বাড়ার সাথে সাথে পানি বাহিত রোগের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বেশিরভাগ শিশু ও বৃদ্ধাদের ডায়রিয়া, আমাশয়, শ্বাস কষ্টসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দিচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিবুল আলম বলেন,পানির সমস্যা সমাধানে আমরা বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করছি। ইউনিয়নে পানির ট্যাংক বিতরণসহ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে আরও মেশিন তৈরি করা হচ্ছে।