বাংলার ভোর প্রতিবেদক
গত ১৪ মাস ধরে যশোর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলার নথির কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। মামলাটি বিচারের জন্য জেলা জজ আদালতে বদলি করা হলেও দীর্ঘদিন ধরে ওই নথি না পাওয়ায় বিচারিক কার্য ব্যাহত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট আদালতের পেশকার ও পিয়ন আসামি পক্ষের কাছ থেকে মোটা অংকে উৎকোচের বিনিময়ে নথিটি গায়েব করেছেন বলে বাদী পক্ষের অভিযোগ রয়েছে। এই ব্যাপারে গত ২৪ এপ্রিল চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী স্বপন কুমার ভদ্র।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ২১ লাখ টাকা পাওনা থাকায় মণিরামপুর উপজেলার কাজিয়াড়া গ্রামের শাহাজউদ্দীন সরদার বালিধা গ্রামের গোলাম রসুলের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর চেক ডিজঅনারের অভিযোগ এনে মণিরামপুরের আমলি আদালতে একটি মামলা করেন। যার নাম্বার সিআর-১০৫৫/২২। অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচারক আসামির বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের ১ মার্চ মামলাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বদলির আদেশ দেন সংশ্লিষ্ট বিচারক। কিন্তু মামলার নথি আজঅবধি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়নি। সে সময় মণিরামপুর আমলি আদালতের পেশকারের দায়িত্বে ছিলেন মোজাফ্ফর হোসেন। আর পিয়ন ছিলেন জাকির হোসেন। আদালতে মামলাটির নথি খুঁজে না পেয়ে তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানান নথি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এতে করে বাদী পক্ষের সন্দেহ হয় আদালত সংশ্লিষ্ট পেশকার ও পিয়ন এই নথি গায়েব করে ফেলেছেন। পরবর্তীতে আবারও খোঁজ খবর নিয়ে তারা আশঙ্কা করেন ওই পেশকার এবং পিয়ন অবৈধভাবে আসামির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মামলার নথিটি নষ্ট করে ফেলেছে।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয় আসামি গোলাম রসুল এলাকায় প্রচার করে বেড়াচ্ছেন তিনি মামলা থেকে খালাস পেয়ে গেছেন।
এ বিষয়ে আইনজীবী স্বপন কুমার ভদ্র বলেন, সাধারণত মামলা বদলি হলে এক আদালত থেকে আরেক আদালতে যেতে সময় লাগে সাতদিন। সেখানে এক বছর দুই মাস হয়ে গেছে। কিন্তু নথি যায়নি। এমনকি নথিটির কোনো হদিসই নেই। যা মোটেও কাম্য না। এতে করে বাদী পক্ষ তার প্রতি (আইনজীবীর) প্রতি অনিহা দেখাচ্ছে। তারা আইনের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলছে। এ বিষয়ে আদালতের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
এ বিষয়ে পেশকার মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, আদেশের পর মামলার নথিটি প্রথমে তার কাছেই আসে। পরবর্তীতে তিনি লেখালেখির কাজ শেষ করে কম্পিউটারে পাঠিয়ে দেন। এরপর সে নথি আর তার কাছে ফেরত আসেনি। ফলে নথিটি কোথায় আছে তা বলতে পারেন না তিনি। তবে তিনি নথিটি খুঁজে পেতে চেষ্টা করছেন। এছাড়া অবৈধভাবে প্রভাবিত হওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।