আরিফুল ইসলাম ও নয়ন হোসেন মণিরামপুর
যশোরের মণিরামপুর উপজেলার নেংগুড়াহাট অঞ্চলে অনলাইন ক্যাসিনো জুয়ার আড্ডা জমজমাট হয়ে উঠেছে। এ জুয়ার আসরে সর্বস্ব হারা হচ্ছেন এলাকার দরিদ্র কৃষক তেকে শুরু করে যুব শ্রেণীর সদস্যরা।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার নেংগুড়াহাটের পূর্ব মাথায় আক্তারুলের চায়ের দোকান ও গৌরীপুর ভাবীর মোড়ে এলাকার জুয়াড়িরা মোবাইলের মাধ্যমে আধুনিক পদ্ধতিতে অনলাইন ক্যাসিনো জুয়া চালাচ্ছেন। এলাকাবাসীর কাছে এটি এখন মাদকের চেয়েও ভয়াবহ। বিশেষ করেওয়ান এক্সবেট নামে অনলাইন জুয়ায় তরুণ প্রজন্ম বার্চুয়াল জগতের নীল হাতছানিতে প্রলোভিত হয়ে হাজার হাজার এমনকি লাখ টাকার জুয়া খেলে চলেছেন। এ জুয়ার জন্য এ অঞ্চলে বেশ কয়েকজন এজেন্ট আছেনযাদের মধ্যে গৌরীপুর গ্রামের আব্দুল গনির ছেলে ফিরোজ হোসেন তিনি নেংগুড়াহাট পূর্ব পাশ গ্রাম গুলো পরিচালনা করে। আটঘরা গ্রামের বিকাশ ব্যবসায়ী সোহাগ হোসেন তিনি নেংগুড়াহাটের পশ্চিম পাস এলাকাগুলো পরিচালনা করেন। রোকুনজামান, সাহেব আলী কাট রন্তেশ্বপুর, আমিনুর রহমান ধোপাডাংগা এলাকায় এ জুয়ার ব্যবসা পরিচালনা করেন।
এ বিষয়ে নেংগুড়াবাজার কমিটির সভাপতি মফিজুর রহমান সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হকের অভিযোগ সূত্র জানা গেছে, নেংগুড়াহাট অঞ্চলসহ বিভিন্ন গ্রামের জুয়াড়িরা চায়ের দোকানে আড্ডার আড়ালে, গুদাম ঘরে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ছাদে এমনকি খোলা মাঠেও ওয়ান এক্সবেট নামে অনলাইন জুয়ায় পরিচালনা করছেন। আর জুয়ার টাকা জোগাড় করতে চুরি ও ছিনতাইয়ের মতো অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে এলাকার নিম্ন আয়ের মানুসেরা। বাড়ছে পারিবারিক কলহ, নারী নির্যাতনের মতো নানাবিধ অপরাধে। এ জুয়ায় অংশ নিতে প্রথমে টাকার বিনিময়ে গ্রুপের সদস্য হওয়ার শর্ত দেয়া হয়। চাওয়া হয় জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর। নাম, বয়স, জন্ম তারিখ ও মোবাইল ফোন নম্বর। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ধোপাডাঙ্গার আমিনুর রহমান, কাঠ রন্তেশ্বপুরের সাহেব আলী, রতনদিয়ার রোকুনজামান, গৌরীপুরের আক্তার, আটঘরার তরিকুল ও তোতামিয়া, ইসমাইল, লুৎফর রহমান (কুন্ডু), নছি, ইকবাল, তুহিন, মফিজ মাইক্রো গাড়ি, মোজাম্মেল, আদম প্রমুখরা এই অনলাইন জুয়ার সাব এজেন্ট ও সদস্য। এরাই বিবিভিন্ন বিদেশি মোবাইল এ্যাপসের মাধ্যমে অনলাইন জুয়া পরিচালনা করেন। কথিত রয়েছে নেংগুড়াহাটের স্থানীয় প্রতিনিধি (এজেন্ট) রয়েছে বিকাশ ব্যবসায়ী সোহাগ হোসেন, কাঠ ফার্নিচার ব্যবসায়ী সাহেব আলীসহ আয়ো কয়েকজন।
আলাপকালে চালুয়াহাটি ইউনিয়নের রন্তেশ্বপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন (মধু) বলেন, আমি নিজে একজনের মাধ্যমে কৌতুহলবশত একটি অ্যাপস নামিয়েছিলাম এলাকার এক ব্যক্তির মাধ্যমে ডিপিও করে এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা চোখের পলকে হারিয়ে আমি এখন নিঃস্ব। এভাবে যদি চলতে থাকলে এলাকার যুবসমাজ নিঃস্ব হয়ে যাবে। আমি অবাক হয়ে যাই ক্লাস সেভেন,এইটে পড়ুয়া বাচ্চারও এই জুয়ায় নেশাগ্রস্থ হয়ে আছে।
এ বিষয়ে রাজগঞ্জ পুলিশ তদন্তকেন্দ্র ইন্সপেক্টর রফিক জানান, অনলাইন জুয়া বন্ধে কসর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তথ্য পেলেই জুয়ার আড্ডায় অভিযান চালানো হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, অভিযোগ পেলে সাথে সাথেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।