বাংলার ভোর প্রতিবেদক
নতুন প্রজন্মের মাঝে সততা ও নিষ্ঠার জন্ম এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য ‘সততা স্টোর’ স্থাপন করার জন্য যশোরে ৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ৮হাজার ৯শ’ ৫০ টাকা করে দেয়া হয়েছে। আর ১৪ শিক্ষার্থীকে ৬হাজার টাকা করে শিক্ষাবৃত্তি ও শিক্ষা উপকরণ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সকালে যশোর জিলা স্কুল মিলনায়তনে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদারসহ অতিথিবৃন্দ এ অর্থ তুলে দেন ।
প্রধান অতিথি এসময় বলেন, শিশু যখন পৃথিবীতে ভুমিষ্ট হয় তখন সততা নিয়েই জন্ম গ্রহন করে। পরিবার তাদেরকে সময় দেয় না। ফলে বাধ্য হয়ে তারা অন্য কোনো অবলম্বন বেছে নেয়। খারাপ সঙ্গে এক পর্যায়ে সে অসৎ হয়ে উঠে। ফলে পরিবার থেকেই সততার শিক্ষা দিতে হবে। ‘সততা স্টোর’ সততা চর্চার একটি প্লাটফর্ম। এটি একটি প্রতীক। নতুন প্রজন্মকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা এবং অল্প বয়স থেকেই দুর্নীতি বিরোধী নৈতিকতায় উদ্বুদ্ধ করার এ উদ্যোগকে তিনি স্বাগত জানান। একই সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি প্রতিটি পরিবারে সততা স্টোর গড়ে তোলার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের উপপরিচালক মো. আল-আমিন সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন বিশ্বাস, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাহফুজুল হোসেন, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম।
যশোরের শিক্ষাবৃত্তি ও শিক্ষা উপকরণ পেয়েছেন, সদর উপজেলার আয়শা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আরমিন আক্তার ও রুপদিয়া ওয়েলফেয়ার একাডেমির সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী সৌহার্দ্য ইসলাম, কেশবপুর উপজেলার সুফলকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত ও আটল্ড এসএল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী জ্যোতি দে, চৌগাছা উপজেলার সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আনান কবীর ও স্বরুপদাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইভা পারভীন, মণিরামপুর উপজেলার চন্ডিপুর মাদ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী নিলয় হালদার ও কাঠাখালী হাজরাইল নলঘোনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী লামিয়া খাতুন, বাঘারপাড়া উপজেলার সেকেন্দারপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মিনহাজ উদ্দিন ও আন্দুলবাড়িয়া ইবনে আব্বাস দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেনীর শিক্ষার্থী তাহমিদা সুলতান, ঝিকরগাছা উপজেলা সম্মিলনী বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দশম শ্রেনী ইয়াসমিন খাতুন ও ঝিকরগাছা বিএম হাইস্কুলের দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী নাবিবা খাতুন, অভয়নগর উপজেলার মথুরাপুর পুরাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী মবিন হোসেন ও রাজ টেক্সটাইল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অন্তরা পাল।
এদিকে, ‘সততা স্টোর’ স্থাপন করার জন্য অর্থ পেয়েছে, বসুন্দিয়া স্কুল এন্ড কলেজ, তীরেরহাট সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসা, শুড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, যশোর আদর্শ বহুমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পুলেরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আমদাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নিউ টাউন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চাঁচড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রুপদিয়া শহীদ স্মৃতি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, পাঁচবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাহাদুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মুনসেফপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আঞ্জুমান আরা একাডেমি, যশোর বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সেক্রেড হার্ট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কাশিমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মীরাপুর ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসা, দানবীর হাজী মো. মহাসীন মাদ্যমিক বিদ্যালয়, লেবুতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ফুলতলা আবেদীয়া দাখিল মাদ্রাসা, দেয়াপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল যশোর, পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, যশোর জিলা স্কুল, বাদশা ফয়সল ইসলামী ইন্সটিটিউট, রুপদিয়া ওয়েল ফেয়ার একাডেমি, প্রগতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মুসলিম একাডেমি, শংকপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আমিনা আহমেদ গোপালপুর তালবাড়িয়া মডেল মাধ্যমিক বালিক বিদ্যালয়, উপশহর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, যশোর আমিনিয়া কামিল মাদ্রাসা, আব্দুস সামাদ মেমোরিয়ার একাডেমি, সম্মিলনী ইন্সটিটিউট ও আলহাজ্ব মতিউর রহমান মহিলা ফাজিল মাদ্রাসা।
দুর্নীতি দমন কমিশন ২০১৭ সালে সর্বপ্রথম সততা স্টোর ধারণার সূচনা করে। দেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের বিদ্যালয় ও মাদ্রাসাগুলোতে সততা স্টোর স্থাপনের জন্য কমিশন প্রতি বছর অর্থায়ন করে আসছে। দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, যশোরের আওতায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে যশোর ও নড়াইল জেলার মোট ২৪টি বিদ্যালয়ে সততা স্টোরের জন্য স্কুলপ্রতি ১০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট ২৫০টি বিদ্যালয়ের অনুকূলে মোট ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এর মধ্যে যশোর জেলার ১৭৫টি স্কুল ও মাদ্রাসা রয়েছে। যশোর সদর উপজেলায় ৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ৭টি উপজেলায় ২০টি করে মোট ১৪০টি প্রতিষ্ঠানে এই অর্থ বরাদ্দ হয়।