♦ এ যেন অপরাধের স্বর্গরাজ্য
♦ ছিল নায়িকাদের যাতায়াত
♦ ভিতরে কি হয় জানতে পারে না কেউ
শাহরিয়ার আলম সোহাগ
বাংলো দেখে তিনি আপনাকে হতবাক হতেই হবে। ফাঁকা মাঠের মধ্যে এমন আলীশান বাংলো বাড়ি। যার আশেপাশে শুধুই মাঠ আর মাঠ। কি নেই সেখানে। প্রায় ২৫ বিঘা জমির উপর এই বাংলো বাড়ির মালিকা এমপি আনার হত্যার মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীন। আর এই বন্ধুর বাংলোতে মাঝে মাঝে যেতেন এমপি আনার।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গী বাজার থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দুরে ফাঁকা মাঠের মধ্যে সুবিশাল আলীশান বাংলো বাড়ি। বাংলোর চারপাশে কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা। বাইরে থেকে কেউ ভিতরে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। গ্রামের কেউ ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না। সেখানে বাংলো বাড়ির মেইন গেট বন্ধ পাওয়া যায়। পরে এই প্রতিনিধি ড্রোন পাঠিয়ে কিছু দৃশ্য ধারণ করে।
এই বাংলা বাড়িতে কি নেই। কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা ২৫ বিঘা জমিতে রয়েছে বিশাল পুকুর। একটি কাঁচ দিয়ে ঘেরা ডুপ্লেক্স বাড়ি ও অন্যটি ইট পাথরের। এর সামনে রয়েছে সুইমিং পুল। প্রতি ঘরে রয়েছে এসির সংযোগ। বাংলো বাড়ির নিরাপত্তায় রয়েছে প্রায় শতাধিক সিসি ক্যামেরা। রয়েছে ৪টি সিসি ক্যামেরা। এছাড়াও ঘাস কাটার মেশিন ও একটি মাইক্রোবাস রয়েছে সেখানে।
গ্রামের কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ৬ বছর আগে প্রায় ২৫ বিঘা জমির উপর তৈরি করা হয় এই বাংলো বাড়ি। তারা কখনো ভিতরে প্রবেশ করেননি। তবে মাঠে কাজ করতে গিয়ে কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে দেখেছি। ওই বাংলো বাড়ির আশেপাশে কোন বসতি নেই। নির্জন স্থানে এই বাড়ি। রাত হলে কাঁটাতারের চারপাশে জ¦লে আলো। কিন্তু ভিতরে কি হচ্ছে কেউ জানতে পারছে না। রাতে বড় বড় গাড়ি আসতো। অনেকেই সেই গাড়িতে নারী থাকতে দেখেছেন। এমকি নায়িকারা ও মাঝে মাঝে আসতেন এই বাংলোয়।
এলাঙ্গী গ্রামের আকলিমা খাতুন নামে এক নারী বলেন, গত জাতীয় ভোটের পরে ওই বাংলোয় যায় এমপি আনার। প্রায় সে এই বাংলোতে আসতো।
মোজাফ্ফর নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, দিনের বেলা বেশি গাড়ি ওই বাংলোতে প্রবেশ করে না। বেশিরভাগ রাত ১০ টার পরে দামি দামি গাড়ি প্রবেশ করে। ওই বাংলোতে যারা কাজ করে তারা কেউ কোটচাঁদপুরের না। অনেক গাড়িতে তিনি নারী থাকতে ও বাংলোর ভিতরে হাটাহাটি করতে দেখেছেন।
এমপি আনারের আরেক বাল্যবন্ধু গোলাম রসুল বলেন, আনার ও আক্তারুজ্জামানের মধ্যে প্রায় ৩০ বছরের সম্পর্ক। তাকে নিয়ে এমপি আনার দুইবার সেখানে গিয়েছেন। গত চারমাস আগেও তিনি গিয়েছেন।
মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীনের ভাই ও কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র সহিদুজ্জামান সেলিম বলেন, আমরা পত্র-পত্রিকায় বা টিভি মিডিয়ায় তার ভাইয়ের কথা উঠে আসছে। যদি তদন্তে তার নাম উঠে আসে তাহলে তার শাস্তি চাই। তবে আমার বিশ্বাস হচ্ছে না যে তার ভাই এ রকম কাজ করতে পারে।