বেনাপোল থেকে রাজু আহমেদ
মিটার রিডিং না দেখেই বিদ্যুৎ বিল করা ও সময়মত বিল না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া অঞ্চলের পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকরা।
যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর আওতায় বাগআঁচড়া সাব জোনাল অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের বিরুদ্ধে ফুঁঁসে উঠেছেন সাধারণ গ্রাহকরা। প্রতি মাসে বাড়ি বাড়ি যেয়ে মিটার রিডিং না নেয়া ও সময়মত বিদ্যুৎ বিল বাড়িতে পৌঁছে না দেয়াটা তাদের নিয়মে পরিণত হয়েছে। গ্রাহকরা বলছেন, কয়েক মাস ধরে চলছে এ অবস্থা। অভিযোগ করেও প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।
বাগআঁচড়ার জামতলা এলাকার আবাসিক গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের শেষ তারিখ প্রতিমাসের ২৬ তারিখ। অথচ ২৫ মে শনিবার পর্যন্ত এলাকার কেউই মে মাসের বিলটি হাতে পাননি বলে অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা।
একজন বিদ্যুৎ গ্রাহক লেছি ইয়াসমিন বলেন, মিটার রিডাররা প্রতিমাসে না এসে মাঝে মাঝে আসেন। সব সময় তারা অনুমান নির্ভর বিল করে থাকেন। এতে প্রকৃত বিল আমরা দিতে পারি না। বিশেষ বিশেষ সময় মিটার দেখে রিডিং নিয়ে আমাদের উপর বাড়তি বিলের বোঝা চাপিয়ে দেয়।
বিদ্যুৎ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা ও মিটার রিডারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণত বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর মিটার রিডাররা বাসায় বাসায় গিয়ে মিটারের বর্তমান রিডিং নিয়ে আসেন। সেই রিডিং থেকে আগের মাসের প্রাপ্ত রিডিং বাদ দিলেই এই মাসের ব্যবহৃত বিদ্যুতের হিসাব পাওয়া যায়। সেগুলো বিভিন্ন সø্যাব অনুযায়ী হিসাব করে বিদ্যুৎ ব্যবহারের বিল করা হয়ে থাকে।
সামটা গ্রামের সেলিম রেজা বলেন, এদের পলিসিটা হলো এরা দু-চার মাস প্রকৃত বিলের চাইতে ইউনিট কম লেখে। বিশেষ করে জুন ও ডিসেম্বর মাসে প্রকৃত ইউনিট দিয়ে বিল করে তাতে এদের লাভ হচ্ছে বেশি ইউনিটে রেট বেশি পাওয়া যায়। আমরা জনগণ আমাদের কিছু করার থাকে না। এ যেন শুভঙ্করের ফাঁকি।
জামতলা জামে মসজিদের কোষাধ্যক্ষ হাফিজুর রহমান বলেন, গত মাসে (এপ্রিল) তার মসজিদের বিদ্যুৎ বিলের কাগজ পাননি। আজ ২৫ মে মাসের বিল দেয়ার শেষ তারিখ ২৬ মে অথচ মে মাসের বিলের কাগজও পাননি। দায় তাদের, অথচ জরিমানা দিতে হবে তাদেরই।
একই কথা বলেন সোহেল রানা। তিনি বলেন, আমিও গত মাসের বিলের কাগজ পাইনি। মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ দেখে বিল দিলাম। এখনও এ মাসের বিলের কাগজ পাইনি।
বাগআঁচড়ার গোলাম রব্বানী বলেন, ওরা আমার মিটারের রিডিং না দেখে বিল করেছে ১২ হাজার ৭৩৮ টাকা। এ ব্যাপারে অফিসে যোগাযোগ করলে তারা বলছে, তোমার বাড়ি এসি চলে তাই অতিরিক্ত বিল এসেছে। অথচ আমার বাড়ি কোন এসি নেই। বুঝিয়েও কোন লাভ হয়নি কারণ ওদের রিডিং বই এ লেখা আছে আমার বাসায় এসি চলে।
টেংরা গ্রামের শামীম আহমেদ বলেন, গত মাসে এক দিন আগে বিলের কাগজ পাইছি। বিদ্যুৎ অফিসের লোকেদের গ্রামে কিছু দালাল (ইলেকট্রিশিয়ান) আছে যাদের কাছে বিদ্যুৎ বিলের কপি দিয়ে যায়। এরাই মূলত গ্রাহকদের কাছে পৌছে দেয়। নানা কাজের উছিলায় তারা বিলের কপি গ্রাহককে দেয় না। এ কারণেই সময়মত গ্রাহকরা বিল হাতে পান না।
বাগআঁচড়া সাব জোনাল অফিসের এজিএম গাজী সোহরাব হোসেনের কাছে জানাতে চাইলে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ বিল রিডিং যারা করেন তারা বাড়ি বাড়ি গিয়েই তো বিল রিডিং করে। তারা কেন অফিসে বসে বিল রিডিং করবে। এটা কোন সমস্যা না, দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে। আমাদের নতুন বিল রিডার এসেছে। অনেক সময় বাড়ি খুজে পায়না এজন্য হয়তো দেরি হয়ে গেছে। তবে সব কিছু দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে।