বাংলার ভোর প্রতিবেদক
আর একদিন পর কোরবানি ঈদ। যশোরের ২১ পশুহাট জমে উঠেছে। তবে এবারও দেশি ছোট গরুর দিকে ক্রেতাদের চাহিদা বেশি রয়েছে। এদিকে, হাটগুলোতে রোগাক্রান্ত পশু নির্ণয়ে ১০টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত করা হয়েছে। অন্যান্য বছরের মতো অনলাইনে পশু কেনাবেচার সুযোগের পাশাপাশি পশু হাটে থাকছে ক্যাশলেস সুবিধা। ফলে টাকা ছিনতাইয়ের ভয় নেই। তাছাড়া অসৎ কারবারীদের রুখতে প্রশাসনের কড়া নজরদারি থাকবে। বসানো হবে জাল টাকা সনাক্তের মেশিন।
দেশে আগামীকাল ১৭ জুন পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। এই কোরবানির ঈদের বাজার ধরতে যশোরে প্রায় ১০ হাজার খামারি ১ লাখ ২৬ হাজারের বেশি গরু-ছাগল ও ভেড়া মোটাতাজাকরণ করেছে। চাহিদার তুলনায় বেশি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত থাকায় অন্যবারের মতো এ বছরও সরকারিভাবে বিদেশ থেকে গরু আমদানি করা হবে না। অন্যদিকে, চোরাই পথে দেশে আসা কোনো পশু যাতে হাটে উঠতে না পারে সে দিকেও লক্ষ্য রাখছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।
যশোর জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রাশেদুল হক বলেন, এ বছর যশোরে কোনো পশুর সংকট নেই। চাহিদার চেয়ে উদ্বৃত্ত আছে ৩০ হাজার ১৩৩টি পশু। চাইলে অন্য জেলাও কোরবানির পশু পাঠানো যাবে।
তিনি আরও বলেন, জেলার ৮ উপজেলায় মোট ২১টি পশুর হাট বসবে। এর মধ্যে বৃহত্তর পশুহাট হবে শার্শা উপজেলার সাতমাইলে। প্রস্তুত করা হয়েছে ১০টি মেডিকেল টিম। ক্রেতা-বিক্রেতার সুবিধার্থে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
যশোরে সবচেয়ে বড় পশুহাট শার্শার সাতমাইল পশুহাট। শনিবার সারিবদ্ধভাবে রাখা কোরবানির পশুগুলো রাখা হয়েছে। গরু ছাড়াও বৃহত্তর এই স্থায়ী পশুর হাটে মহিষ, ছাগল ও ভেড়া বিক্রি করতে এসেছেন অনেকে। এগুলোর দাম জানতে চাইলে আলমগীর হোসেন নামে এক বিক্রেতা বলেন, দেশি গরুর দাম মানভেদে এক লাখ ২০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকা রয়েছে।
শহরের বেজপাড়ার জামিলুর রহমান নামে একজন ক্রেতা জানান, গত বছর যে গরুর দাম ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা ছিল এ বছর সেই গরু এক লাখের ওপরে তারা দাম হাঁকছেন। এভাবে গরুর আকার অনুযায়ী দামেও তফাৎ রয়েছে।
ঝিকরগাছার মাটিকুমড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফা জানান, গতকাল আমরা এক লাখ ৩৬ হাজার টাকা দিয়ে একটি দেশি জাতের গরু কিনেছি। গতবারের তুলনায় অনেক দাম। তারপরও কিনতে হবেই।
শার্শার লাউতাড়ার সাকিব হাটে এনেছেন একটি বড় সাইজের কালু নামের গরু। চার বছর বয়সী এই গরুটির দাম চাইছেন ৫ লাখ বিশ হাজার টাকা। চার লাখ ৫০ হাজারের কমে বিক্রি করবেন না তিনি। একটি ষাঁড়সহ চারটি গরু এনেছেন শার্শার বাগআঁচড়ার ব্যাপারী রহমত উল্লাহ। তার মধ্যে একটি গরু দেখিয়ে তিনি বলেন, এটি আজকের হাটের সবচেয়ে সুন্দর গরু। ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করবেন তিনি। দেড় লাখে বিক্রি করলে তার লোকসান হবে।
হাট প্রতিনিধি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, হাটের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ক্রেতা ও বিক্রেতারা যাতে প্রতারিত না হন, সে জন্য মাইকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, এবার হাট ইজারা দেওয়া হয়নি। জেলা প্রশাসন কর্তৃক সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।