বাংলার ভোর প্রতিবেক
‘ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কার ও নিরীহ শিক্ষার্থীদের হত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে গণসমাবেশ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যশোর জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ। শুক্রবার বিকেলে শহরের ভৈরব চত্বরে এই সমাবেশ শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংগঠনটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা শোয়াইব হোসেন। গণসমাবেশে বক্তারা বলেন, শত শত জনতা শিক্ষার্থীর রক্তের বিনিমিয়ে দেশে স্বৈরশাসনের অবসান হয়েছে। এখন সময় দেশ গড়ার। এখন সময় সাম্য, সামাজিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচারভিত্তিক বাংলাদেশ নির্মাণের। এই যুগ সন্ধিক্ষণে নেতৃবৃন্দ আগামী বাংলাদেশ গড়ার ৯ দফা পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
পরিকল্পনাগুলো হলো- বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কেউ পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। গ্রহণযোগ্য তদন্ত কমিশন ও স্বতন্ত্র ট্রাইবুনাল গঠন করে জুলাই গণহত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। একই সাথে গত ১৬ বছরে সংগঠিত সকল রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক হত্যাযজ্ঞ, গণহত্যা, গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার করতে হবে। তদন্ত সাপেক্ষে আহত/নিহত পরিবারকে ক্ষতিপূরণসহ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে যে সকল ব্যক্তি বা সংগঠন দোষী সাব্যস্ত হবে, তাদেরকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। তদন্ত সাপেক্ষে গত ১৬ বছরে সকল দুর্নীতিবাজ ও বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের সকল সম্পত্তি ক্রোক করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করতে হবে এবং বিদেশে পাচারকৃত টাকা ফেরত আনার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বিগত ১৬ বছরে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে। সকল দুর্নীতি ও টাকা পাচারের শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, বিচার বিভাগসহ প্রজাতন্ত্রের যে সকল কর্মচারী আইন, সংবিধান, শপথ লঙ্ঘন করে অপেশাদার আচরণ করেছেন তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠির চিন্তা-চেতনা ও অনুভূতির বিরুদ্ধে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না।
সমাবেশে প্রধান অতিথি খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা শোয়াইব হোসেন বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতাকর্মী, এমপি মন্ত্রীরা সীমাহিন দুর্নীতি করেছে। তারা ক্ষমতায় থাকাকালীন দেশের জনগণের উপর শাসন করেছে। যার ফলে দেশের ‘ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। বারবার তিনি বলেছেন ক্ষমতা ছেড়ে দেশ থেকে পালাবেন না। তিনি পালিয়েছেন কিনা বিশ্বের সকল মানুষ দেখেছে। আর এক ঘন্টা বঙ্গভবনে থাকলে ছাত্রজনতা তার শাস্তিÍ নিজ হাতেই করতো।
তিনি বলেন, ইসলামী আন্দোলন বরাবরাই দেশের মানুষের নায্য দাবিতে আন্দোলন করেছে। দেশে প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। দল মত নির্বিশেষে একটি সাম্য সামাজিক দেশ গঠনে সবাইকে ইসলামী আন্দোলনের ছায়াতে আসার আহ্বান জানান। এ সময় তিনি কোটা আন্দোলনে স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রাণহানি ও নাশকতার জন্য যারা দায়ী, তাদের চিহ্নিত করে আইন অনুযায়ী শাস্তির দাবি জানান। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ যশোর জেলার সভাপতি মিয়া মোহাম্মদ আব্দুল হালিমের সভাপতিত্বে গণসমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল আলম খোকা, মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবু নসর, সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল হালিম, সংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ আব্দুর রশিদ, প্রচার-দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক ও ইসলামী যুব আন্দোলনের জেলা সভাপতি কামরুজ্জামান, দপ্তর সম্পাদক মুফতি মঈন উদ্দিন, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক গাজী সহিদুল ইসলাম, সদর থানার সভাপতি আখতারুজ্জামান, ইসলামী যুব আন্দোলনের জেলা সাধারণ সম্পাদক আবু রায়হান, সাংগঠনিক সম্পাদক কুতুব উদ্দিন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ যশোর জেলা সভাপতি ইমরান হোসাইনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।