বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর শহরের বেজপাড়া মেইন রোডস্থ পূজারমাঠের পাশের বাসিন্দা অনিল দেবনাথের ছেলে রিংকু দেবনাথের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। শুক্রবার বিকেলে এলাকাবাসীর ব্যানারে সাংবাদিক সম্মেলন ও সমাবেশ করা হয়েছে।
সমাবেশ থেকে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দ্বীপক কুমার রায়। এতে বলা হয়, বেজপাড়া মেইন রোড সব সময় শান্ত এলাকা হিসেবে পরিচিত। এখানে সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করছে বছরের পর বছর ধরে। কিন্তু কয়েক বছর হলো রিংকু দেবনাথ পৌরসভার নকশা বহির্ভুত বাড়ি নির্মাণ করেছেন। পৌরসভা থেকে ৬তলার অনুমোদন নেয়া হলেও ভবন করা হয়েছে ৮ তলা। এতে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তাকে পৌরসভা গত ১৩ আগস্ট তৎকালীন মেয়র হায়দার গণি খান পলাশ স্বাক্ষরিত নোটিশ জারি করেন।
সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী ৭ দিনের মধ্যে নকশা অনুমোদনহীন ভবন ভেঙ্গে ফেলতে হবে। তানাহলে পৌরসভা থেকে অপসারণের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু পৌরসভার সেই নির্দেশ তিনি মানেনি। বরং এলাকাবাসী প্রতিবাদ করে মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছে। সেখানে নিরীহ মানুষদের আসামি করা হয়েছে। আবার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করেছেন তিনি। বলা হয়েছে, হিন্দুদের উপর হামলা করা হচ্ছে। অথচ এসব কোন ঘটনা ঘটেনি। গত ১৭ আগস্ট এলাকাবাসী রিংকু দেবনাথের বিচারের দাবিতে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে আরও বলা হয়েছে, ফ্ল্যাট বিক্রির নামে প্রতারণা করেছেন রিংকু দেবনাথ। ভবনের একটি ফ্ল্যাট বিক্রির জন্য একই এলাকার বিশ^নাথ দত্ত ও ফণীভূষণ পালের কাছ থেকে ৬১ লাখ ১৩ হাজার টাকা গ্রহণ করেছেন। কিন্তু তাদেরকে রেজিস্ট্রি করে দেননি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর প্রদীপ নাথের অফিসে বসে শালিস করা হলে রিংকু দেবনাথ রেজিস্ট্রি করে দিতে সম্মত হয়ে মুচলেকা দেন। এরপরও তিনি ক্রেতাদের ফ্ল্যাট বুঝে না দিয়ে হুমকি দেন।
যশোর-নড়াইল সড়কের মেসার্স ইমান আলী সন্সের মালিক আকতার হোসেন জানান, তিনি ২ লাখ ১৭ হাজার ৩৯৫ টাকা পাবেন। বাড়ি করার সময় রিংকু দেবনাথ তাদের দোকান থেকে রড কিনেছিলেন। বারবার তাগাদা দিয়া সত্ত্বেও তিনি টাকা দিচ্ছেন না। গত ৬ আগস্ট পাওনাদাররা রিংকু দেবনাথের কাছে আসলে তিনি তাদের সাথে খারাপ আচরণ করতে থাকেন। এ সময় স্থানীয় আসিফ মাহমুদ তাকে ভদ্রভাবে কথা বলতে বললে তিনি লাঠি দিয়ে তার মাথা ফাটিয়ে দেন।
যা নিয়ে এলাকায় উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করলে রিংকু দেবনাথ সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন করা হচ্ছে বলে সেনাবাহিনীকে খবর দিয়ে ঘটনাস্থলে আনে। একপর্যায়ে গত ১৫ আগস্ট আদালতে তিনি এলাকার নিরীহ কিছু মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা পিটিশন দায়ের করেছেন।
এদিকে রিংকু দেবনাথের বিরুদ্ধে বাড়ি নির্মাণের সময় আবুল হোসেন ট্রেডার্সের কাছ থেকে রড, সিমেন্ট নিলেও টাকা পরিশোধ করেনি। প্রতিষ্ঠানটির মালিক সিরাজুল এখনও তার কাছ থেকে টাকা বুঝে পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা সেলিম চৌধুরী শেলি, যশোর বাস মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি অসিম কুন্ডু, সাবেক পৌর কাউন্সিলর সন্তোষ কুমার দত্ত, যশোর পূজা উদযাপর পরিষদের সভাপতি দিপংকর দাস রতন, ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি কাজী ফয়েজ আহমেদ, মানিক কুমার সাহা, সুবোধ কুমার সাহা, ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবদল সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ।