বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে দুইদিনে ১৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ভারি বর্ষণে তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চল। ভেসে গেছে মাছের ঘের, পুকুর জলাশয়। মাঠের পর মাঠ ফসল পানির নিচে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবজি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষি ও মৎস্য খাতের। জলাবদ্ধতায় জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, শনিবার ৮১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর রোববার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৭২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। দুইদিনে যশোরে বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৫৩ মিলিমিটার। যশোর পৌর শহরের কয়েকটি নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ সকল এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। টানা বর্ষণে দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয় ও জলাবদ্ধ এলাকার মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার ১৪০ হেক্টর জমির আগাম শীতকালীন সবজির ক্ষেত। একই সাথে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টি বাড়লে ক্ষতির পরিমাণ আরও বৃদ্ধির শংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে চৌগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোশাব্বির হোসাইন বলেন, টানা ভারি বর্ষণে উপজেলার প্রায় এক হাজার ৩৫৫ হেক্টর জমির আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে। একই সাথে ৪শ’ হেক্টর জমির সবজি ও মরিচের ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টিপাত বাড়লে ক্ষতির পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে। এর আগেও চলতি মৌসুমে ভারি বর্ষণে জলাবদ্ধতায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলেন। সেই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছিলেন। এমন সময় ফের ভারি বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ হলো কৃষকরা।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সুশান্ত কুমার তরফদার জানান, দুইদিনের ভারিবর্ষণে শতকরা ২৫ ভাগ কৃষি জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলার ১৪০ হেক্টর সবজির ক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এসব ক্ষেতে কৃষকরা আগাম শীতকালীন সবজি, টমেটো, পাতাকপি, ফুলকপি, পালংশাক চাষাবাদ করেছিলেন। এমন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে।
এদিকে, রোববার ভারি বর্ষণে তলিয়ে গেছে যশোর পৌর এলাকার নিম্নাঞ্চল। বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে শহরের বেজপাড়া, টিবি ক্লিনিকপাড়া, স্টেডিয়ামপাড়া, শংকরপুর, মিশনপাড়া, কারবালা, এমএম কলেজ এলাকা, নাজিরশংকরপুর, বকচর, আবরপুর, উপশহর, চাঁচড়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকার প্রায় ৩০টি সড়ক। এর মধ্যে শংকরপুর, বেজপাড়া, খড়কি, কারবালা, রেলগেট পশ্চিমপাড়া, স্টেডিয়ামপাড়ার অনেক বাড়ি ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। এসব এলাকার ড্রেন ছাপিয়ে উপচে পড়া পানি সড়ক পার হয়ে ঘরের মধ্যেও ঢুকে পড়েছে। জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছেন এ সকল এলাকার মানুষরা।
শংকরপুর এলাকার সালেহা বেগম বলেন, ‘বাড়িঘরে পানি উঠেছে। ঘরের ভেতরে হাঁটু পানি। পরিবার নিয়ে অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়েছি। তিনি বলেন, সড়ক নিচু আর ড্রেন হয়ে গেছে উঁচু। তাই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
খড়কি এলাকার স্থানীয় ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টিতে সড়কে হাঁটু পানি জমেছে। সড়কের পাশে ড্রেন থাকলেও আবর্জনায় পূর্ণ হওয়ায় পানি উপচে সড়কে প্রবেশ করেছে। সড়কের সেই পানি আবার দোকানে প্রবেশ করেছে।
যশোর জিলা স্কুলের শিক্ষার্থী নয়ন হোসেন বলে, বৃষ্টিতে স্কুলে যেতে পারিনি। ছাতাতেও মানাচ্ছে না। বাড়ি থেকে বের হলে রাস্তায় হাটু সমান পানি। স্কুল ড্রেস ভিজে যাচ্ছে, বই খাতাও ভিজে যাওয়ার মতো অবস্থা।
শিরোনাম:
- গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে বিএসপির প্রতিবাদী কবিতা পাঠ ও মানববন্ধন
- ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় এবারও উদীচীর জমকালো আয়োজন
- হাত-পা না থাকা লিতুনজিরা মুখ দিয়ে লিখে দিচ্ছেন এসএসসি পরীক্ষা
- এসএসসির প্রথম দিনে যশোর বোর্ডে অনুপস্থিত ১ ৮০০ পরীক্ষার্থী, বহিস্কার ১
- যশোরে পিতার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় বসলো আশিক
- কেশবপুর বসতবাড়িতে আগুন
- যশোর বোর্ড : আজ এসএসসি পরীক্ষায় বসছে এক লাখ ৪১ হাজার শিক্ষার্থী
- চারুপীঠের প্রস্তুতি : যে নামেই হোক বর্ণাঢ্য বর্ষবরণের শোভাযাত্রা হবে