বিশেষ প্রতিনিধি
বেনাপোল স্থল বন্দরের ২২ নং শেড ইনচার্জ তাপস কুমাররের বিরুদ্ধে বন্দর থেকে এস ম্যাক্স ৩২ সিমেন্ট ও একটি মটর সহ বিভিন্ন মালামাল উধাও করার অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের অভিযোগ মতে বেনাপোল স্থল বন্দরে আমদানীকৃত একটি মটরসহ ৯ প্যাকেজ (নীট ওজন ২০২০ কেজি) যা ৮টি ড্রামে এস ম্যাক্স ৩২ সিমেন্ট নামে একটি পণ্য চালান আমদানী করা হয়। যার মেনিফেষ্ট নং-৩৬৫১৬ বি-সি তারিখ ০৭/১০/১৮। ওই ক্যামিকেল পন্যের চালানটি বন্দরের ২২নং শেডে রাখা হয়। উক্ত মালামাল আমদানীকারক সময় মতো খালাস না নেয়ায় সঙ্গত কারনে কাষ্টমস আইন মোতাবেক পণ্য চালানটি নিলাম তালিকাভুক্ত করে। যার নিলাম সেল নং ০২/২০২৪ তারিখ ২৮/৫/২০২৪। মালামাল খালাস বিলম্ব হওয়ার সুযোগে সুচতুর শেড ইনচার্জ তাপস ড্রাম কেটে মূল্যবান কেমিকেল বের করে বাইরে বিক্রি করে দেয় বলে অভিযোগ। নিলাম তালিকা ভুক্তির সময় মালামাল যখন ইনভেন্ট্রি হয় তখন ৮টি ড্রামর মধ্যে ৪টি ড্রাম ছিদ্র দিয়ে মালামাল বেরিয়ে গেছে মর্মে রিপোর্ট তৈরী করার জন্য কাষ্টমস ইনভেন্ট্রি টিমকে ম্যানেজ করে ধুরন্দর শেড ইনচার্জ তাপস কুমার। সেখানে ইনভেন্ট্রি টিম ৪টি ড্রাম খালি এবং ৪টি ড্রামে ৯৭৮ কেজি আছে বলে রিপোর্ট দেয় কাষ্টমস ইনভেন্ট্রি টিম।
তবে নিলাম কালে নিলাম ক্রেতা ৮টি ড্রামের মধ্যে ৪টি ড্রাম সম্পূর্ন ভর্তি দেখতে পায় হিসেবে রেকর্ড হয়েছে। এবং বাকি ৪টিতে মালামাল কম দেখতে পায়। সে মোতাবেক নিলাম ক্রেতা মেসার্স নিউ টিচ বিডি ৬৯/৭০ মৌলভী বাজার টাওয়ার চকবাজার ঢাকা কর্তৃক দুটি লট ২৩ লাখ ৭২ হাজার ৭শত টাকা মূল্য নির্ধারন পূর্বক নিলামের দরপত্র জমা দেন এবং সর্বচ্চো দরদাতা হিসেবে বিবেচিত হলে দর পত্রে উল্লেখিত টাকার উপর ১০% অগ্রিম আয়কর বাবদ ২ লাখ ৩৭ হাজার ২শত ৭০ টাকা,৭.৫% হারে ভ্যাট বাবদ ১ লাখ ৭৭ হাজার, ৯শত ৫৩ টাকা সরকারী কোষাগারে জমা দেয়ার পর ১০/০৭/২৪ তারিখে কাষ্টমস কর্তৃক নিলাম ক্রেতার অনুকুলে মালামাল খালাস দেয়ার অনুমতি দেয়। কিন্তু নিলাম ক্রেতা শেড থেকে মালামাল খালাস নেয়ার প্রাক্কালে ১৬ নং শেডে রক্ষিত লটটি বুঝে পেলেও ২২ নং শেডের ৯ প্যাকেজের মধ্যে ১টি মটর, ৩টি ড্রাম ক্যামিকেল দেখতে পায়। ক্রয়কৃত মালামাল বুঝে পেতে দেন দরদরবার শুরু করে। বাকি মালামাল শেড ইনচার্জ তাপসসহ সংশ্লিষ্টরা হজম করে ফেলে। যার ফলে তারা নিলাম ক্রেতার সাথে বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করে।
এ ব্যাপরে উপ-পরিচালক রাশেদুল ও শেড ইনচার্জ তাপসের সাথে কথা বললে তারা জানান, মাল পেতে কাষ্টমস কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করার জন্য বলেন। যাতে ঐ মালামাল পুনঃ ইনভেষ্টিগেশন হওয়ার সুযোগে নিলাম প্রক্রিয়া বাতিল হয়।
এ ব্যাপারে কাষ্টমস এর রাজস্ব কর্মকর্তা মনিউর রহমান এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমরা মালামাল ইনভেষ্টিগেশন শেষ করে নিলাম করে থাকি। মালামাল বুঝে দেয়ার দায়িত্ব শেড ইনচার্জ বা বন্দর কর্তৃপক্ষের।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র বলছে ধুরন্দর ঐ শেড ইনচার্জ পণ্য বিক্রি করা মালামালের টাকা দিয়ে ইতি মধ্যে একটি প্রাইভেট কার কিনেছেন। সঠিক তদন্ত করলে বন্দরের দুর্নীতিবাজদের থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।
এ বিষয়ে উপ-পরিচালক রাশেদুলের সাথে যোগাযোগ করেও কোন নিলামক্রেতারা তাদের প্রাপ্য বুঝে পাননি। এ বিষয়ে ধুরন্ধর তাপসের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি তিন ড্রামের বেশি মাল দিতে পারবো না। এস ম্যাক্স ৩২ সিমেন্ট ড্রাম ও একটি মটর না নিলে নিলাম ক্রেতারা কাস্টমসে আমার বিরুদ্ধে পারলে অভিযোগ করুক।