বাংলার ভোর ডেস্ক
তরুণদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে মন্তব্য করে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সেই স্বপ্ন পূরণে ‘বিদেশি বন্ধুদের’ সহযোগিতাও প্রয়োজন।
নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিদেশি বন্ধুদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “তরুণদের আত্মত্যাগ আমাদের সামনে বড় সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। আমরা এই সুযোগ হারাতে চাই না। বিদ্যমান রাষ্ট্র কাঠামো ও প্রতিষ্ঠানগুলোর আমূল পরিবর্তনের মাধ্যমে তরুণরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায়। এটি বাস্তবায়নে আপনাদের সবার সমর্থন প্রয়োজন।”
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বিএসএস জানিয়েছে, জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপ্রাপ্তির ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে সরকারের তরফে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ লাভ করে বাংলাদেশ।
অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবদুল মুহিত, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারি মাহফুজ আলম, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন।
অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে আলোকচিত্রী ও লেখক শহিদুল আলম শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের ঘটনাগুলো নিয়ে লেখা দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
শিক্ষার্থীদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গোটা জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। যারা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিল, আমরা তাদের হতাশ করতে চাই না।
প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের মাধ্যমে একটি নতুন নির্বাচনি ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “যুব সমাজের সামনে কোনো স্বপ্ন ছিল না। স্বৈরাচার তাদের স্বপ্ন ও ভব্যিষতকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। তাই তারা স্বৈরাচারের পতন ঘটাতে বুলেটের সামনে দাঁড়াতে পিছপা হয়নি।”
বিদেশি বন্ধুদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের তরুণরা যে সাহস ও প্রত্যয় দেখিয়েছে, তা আমাদের অভিভূত করেছে। বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে তারা পঙ্গুত্ব বরণ করতে পিছপা হয়নি। তরুণদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ গড়তে আমরা আপনাদের পাশে চাই।”
জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে অবস্থান করছেন প্রধান উপদেষ্টা। সোমবার সেখানে পৌঁছানোর পর থেকে তার ব্যস্ত সময় কাটছে।
মঙ্গলবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি আরও কয়েকটি বৈঠক ও অনুষ্ঠানে অংশ নেন মুহাম্মদ ইউনূস। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলাদেশের নেতা হিসেবে ভাষণ দেবেন।