বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর সেটেলমেন্ট অফিসের অবসরপ্রাপ্ত কপিস্ট মো. আতাউর রহমান’র বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ৪৬ লাখ ৬৮ হাজার ৭৪৬ টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। দুদক যশোরের উপসহকারী পরিচালক চিরঞ্জীব নিয়োগী বাদী হয়ে বুধবার দুর্নীতি দমন কমিশন, যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এই মামলা করেন।
অভিযুক্ত আতাউর রহমান বর্তমানে শহরের নীলগঞ্জ তাঁতীপাড়ার বাসিন্দা। তিনি মণিরামপুর উপজেলার বাংগালিপাড়ার বাসিন্দা। আতাউর রহমানের স্ত্রী দিলরুবা পারভীন যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদে চাকরিরত।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত আতাউর রহমান ১৯৮৯ সালে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের আওতায় যশোর জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে যোগদান করেন। তিনি ২০২০ সালের এপ্রিলে পিআরএল-এ যান। তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়ায় দুদক তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয়। এর প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে তিনি নির্ধারিত ফর্মে স্থাবর অস্থাবর সম্পদের তালিকা দাখিল করেন। দাখিলকৃত বিবরণীতে যশোরে একটি ৪ তলা বাড়ি ও মণিরামপুরে ৬টি দলিলে ১০০.১ শতক জমিসহ এক কোটি ৮লাখ ১৩ হাজার টাকার স্থাবর এবং উপহারের ৫ ভরি সোনা, ল্যাপটপ কম্পিউটার ৫৬ হাজার টাকাসহ মোট এক কোটি ৮ লাখ ৬৯ হাজার টাকার সম্পদের হিসেব দেখান। তবে দুদকের অনুসন্ধানে তার সম্পদের পরিমাণ পাওয়া যায় এক কোটি ১১ লাখ ৪৯ হাজার ৫০৮ টাকা মূল্যের।
তিনি ২০২২-২৩ আয় বর্ষে আয়কর রিটার্ন ফর্মে মোট আয় এক কোটি ৩২ লাখ ১৯ হাজার ৬১৪ টাকা দেখিয়েছেন। ওই সময় ¯ত্রীকে জমি কেনা বাবদ ১০ লাখ টাকা দান ও টয়োটা গাড়ি কেনা বাবদ সাড়ে ১২লাখ টাকা ব্যয়সহ ৫৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা পারিবারিক ব্যয় দেখিয়েছেন। তিনি পিতার কাছ থেকে ৬ লাখ ও সোনার অলঙ্কার বিক্রি বাবদ ৫ লাখ ১৪ হাজার টাকা প্রাপ্তি দেখালেও তার স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি, স্ত্রীর কাছ থেকে ৯ লাখ এবং জমিবিক্রি বাবদ ১৬ লাখ টাকা আয়ের দাবি করলেও তারও প্রমাণ দেখাতে পারেননি।
এভাবে, দুদকের অনুসন্ধানে দেখাগেছে তার নীট সম্পত্তি এককোটি ১১ লাখ ৪৯ হাজার ৫০৮ টাকা। কিন্তু খরচ বাদে তার সম্পদের পরিমাণ হওয়ার কথা ৬৪ লাখ ৮০ হাজার ৭৬২টাকা। বাস্তবতা ও হিসেবে প্রদর্শিত সম্পদের পার্থক্য ৪৬ লাখ ৬৮ হাজার ৭৪৬ টাকা, যা তিনি অবৈধ পন্থায় আয় করে নিজের কাছে রেখেছেন।
জ্ঞাত আয় বহির্ভূত এই অর্থ ও সম্পদ অর্জনের জন্যে তার নামে দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলা হয়েছে বলে দুদক যশোরের উপপরিচালক মো. আল আমিন জানিয়েছেন।