ভি পি ইলিয়াস
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার নাভারন ইউনিয়নের বাদে নাভারণ গ্রামের মাঠে ৭০ বিঘা জমির কৃষকের স্বপ্নভঙ্গ হতে বসেছে। ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের কাছে ৫-৭ জন কৃষক ভেজাল এবং নিম্নমানের ধান বিজের বিষয়ে অভিযোগ করেন।
কৃষকরা জানান, শার্শা উপজেলার উলাশী বাজারের পিপুল নামের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এসিআই কোম্পানির ধানি গোল্ড হাইব্রিড-৪ বিজধান কিনে শ্রাবণ মাসে তা রোপণ করেন। রোপণের পর থেকেই তারা ধানক্ষেতে দেখতে পান অল্প বয়সে কিছু ধান পেঁকে যাচ্ছে, কিছু ধানের গাছ বড় হয়ে থোড় হচ্ছে, কিছু ধানের গাছের পাতা ঝুলে যাচ্ছে, কিছু ধান গাছ ছোট-বড় হচ্ছে, আবার কিছু গাছে ধানই হচ্ছে না।
ঝিকরগাছা উপজেলার নাভারন ইউনিয়নের বাদে নাভারণ গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় কৃষকদের সাথে। কৃষক মফিজুর রহমান ৫ বিঘা জমি, রবিউল হোসেন ৭ বিঘা জমি, মতিয়ার রহমান ৫ বিঘা জমি, আক্কাস আলী ৪ বিঘা জমি, আবু বক্কর ৩ বিঘা জমি, ইসমাইল হোসেন ৩ বিঘা জমি, জয়নাল ২ বিঘা জমি, শফিকুল ইসলাম ৩ বিঘা জমি, নুর ইসলাম ভূইয়া ৩ বিঘা জমি, লিটন এক বিঘা জমি, হাবিবুর রহমান, ১ বিঘা জমি এবং তাইজুল ইসলাম ২ বিঘা জমিতে এসিআই কোম্পানির ধানী গোল্ড বায়ার হাইব্রিড-৪ বীজ ধান রোপন করেছেন।
এ সকল কৃষকরা অভিযোগ করেন, নিম্নমানের এই ধান বিজের কারণে ধানের নানা রকমের সমস্যা দেখা দিয়েছে। যার কারণে পরিপূর্ণ মাত্রায় আমরা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারছি না। এজন্য আমরা কিছু কৃষক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে গিয়েছিলাম। তিনি আমাদের সমস্যার কথা শুনে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবেন বলে জানান।
বাদে নাভারন গ্রামের কৃষক আবু বক্কর জানান, এ মাঠে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ বিঘা জমিতে এ বিজ বপণ করে সকল কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আমরা এ ধান কাটার পর সরিষা, ভুট্টা জাতীয় শস্য আবাদ করব।
রঘুনাথপুর বাগ গ্রামের কৃষক রবিউল হোসেন জানান, আমরা প্রতিবিঘা জমিতে ২২ থেকে ২৫ মণ ধান পেয়ে থাকি। নিম্নমানের ধানবিজ ব্যবহার করে ৫/১০ মণ ধান পাবো কিনা জানিনা। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা যেন ক্ষতিপূরণ পায়, এটা আমাদের দাবি।
উলাশী বাজারের বিজধানের ডিলার জামাল উদ্দীন পিপুল জানান, আমি এসিআই কোম্পানির বিজধান ৩০ বছর ধরে বিক্রি করে আসছি। বিজধান নিম্নমানের এটা এবারই প্রথম কৃষক অভিযোগ করেছেন। ঘটনাও সত্য। আমি এই কোম্পানির ডিলার রিপনের কাছে ফোন করেও যোগাযোগ পাচ্ছিনা। আমি চাই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা ক্ষতিপূরণ পাক।
ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। কোম্পানির বিজধান নিম্নমানের বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা বিজ কোম্পানির কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করলে আমি তাদের পাশে থাকব এবং সহযোগিতা করব।