চৌগাছা সংবাদদাতা
যশোরের চৌগাছা এবং ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার তিন ইউনিয়নের সীমনায় অবস্থিত পুড়াপাড়া বাজার। প্রতিবছর এ বাজার থেকে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হলেও সঠিক পরিকল্পনার অভাবে মাত্র ২শ’ মিটার রাস্তার জন্য প্রায় ৪০ হাজার মানুষের ভোগান্তি পোহাতে হয় প্রতিনিয়ত।
বাজারে প্রবেশ মুখে মাত্র ২শ মিটার রাস্তার বেহাল অবস্থা। বাজারের মেইন স্ট্যাণ্ডে সম্প্রতি কংক্রিট ঢালায় রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু রাস্তা ও বাজারের পানি নিস্কাাশনের কোনে ব্যবস্থা রাখা হয়নি। রাস্তার পূর্বদিকের অংশে বারোমাসই পানি জমে থাকে। পানি কমার সাথে সাথে কাঁদায় ডুবে থাকা রাস্তা দেখে বোঝার উপায় থাকে না এটি কোনো বাজারের পাকা রাস্তা। অথচ কংক্রিট ঢালায় রাস্তাটি চৌগাছার দিকে ২শ’ মিটার বর্ধিত করলেই হতে পারত এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান।
প্রায় কয়েক হাজার ব্যাবসায়ী বাজারটিতে ব্যাবসা করেন। পুড়াপাড়া বাজার সহ এর পাশ^বর্তী এলাকায় রয়েছে প্রায় ৬০ টি চাতাল ও মিল। এছাড়াও রয়েছে ২টি অটো রাইস মিল। চৌগাছা উপজেলা থেকে ১০ কি.মি. এবং মহেশপুর উপজেলা থেকে ১১ কি.মি. দূরে অবস্থিত বাজারটিতে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ হাজার মানুষ নানা প্রয়োজনে যাতায়াত করেন।
বাজারে পাশেই রয়েছে কাটগড়া ডিগ্রি কলেজ, কাটগড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কাটগড়া সরকারি কুঠি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মান্দারবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসাসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বাজারটির মধ্যে রয়েছে সোনালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংকের একটি করে শাখা ও বাঁওড় মৎস্য প্রকল্পের কাটগড়া বাঁওড় অফিস, বেশ কয়েকটি এনজিও এবং বেসরকারি সংস্থার অফিস। বাজারের চতুর্দিকে রয়েছে ভারতীয় সীমান্তের ৪ টি বিজিবি ক্যাম্প। বিজিবি ক্যাম্পগুলোতে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা এটি। চৌগাছার সুখপুরিয়া, নারায়ণপুর ও স্বরূপদাহ ইউনিয়ন এবং মহেশপুর উপজেলা মান্দারবাড়িয়া, যাদবপুর, নাটিমাসহ কয়েকটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ বাজারটিতে কেনা বেচা করে থাকেন। দু’ উপজেলা সীমান্তবর্তী হাটটি থেকে ইজারা বাবদ বছরে প্রায় কোটি টাকা রাজস্ব আয় হলেও এখানে উন্নয়নে কোনো কাজ করেনি কতৃপক্ষ।
পুড়াপাড়া বাজারের ব্যবসায়িরা জানান, বাজারটির পাশ ঘেষেই রয়েছে এলাকার ঐতিহ্যবাহি কাটগড়া বাঁওড়। বাজার থেকে একটি ড্র্রেন বাঁওড়ে নামিয়ে দিলে বাজারে জলাবদ্ধতার সমস্যার সমাধান হয়।
তারা আরো বলেন, বাজারটি দক্ষিণ পার্শ^ চৌগাছা উপজেলার মধ্যে আর বেশির ভাগই মহেশপুর উপজেলার অংশ।
জানতে চাইলে সুখপুকুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান হবিবর রহমান বলেন ‘ভাঙ্গা অংশ আমার ইউনিয়নের মধ্যে নয়। আমার জানামতে সড়কটির সংস্কার কাজ প্রক্রিয়াধীন ছিল। বর্তমান পরিস্থিতির কারণে এখন স্থগিত রয়েছে’।
মহেশপুর উপজেলার স্থানীয় ইউপি সদস্য মাওলানা আব্দুল কাদের জানান, এলজিইডির এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি মহেশপুর উপজেলার মেধ্যে থাকলেও সড়কটি আইডি চৌগাছা উপজেলার অন্তর্ভুক্ত। তিনি আরো জানান, সড়কটি ভেঙ্গে খানা খন্দে পরিণত হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই বোঝার উপায় থাকেনা এটি একটি বাজারের রাস্তা। এজন্য কংক্রিট ঢালায় করা সড়কটি ২/৩’শ মিটার বর্ধিত করা খুবই জরুরী।
মান্দারবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, আমরা ছোট খাঁট কাজ করি। বাজার উন্নয়নের কাজ আমার না।
বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও মান্দারবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, একজন চেয়ারম্যান বাজারের অবকাঠামোর উন্নয়ন করতে পারেনা। বাজারের পুড়াপুড়া চৌগাছা সড়কের মেইন স্ট্যান্ডের পূর্বদিকে কিছু অংশে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে অনেক ব্যাবসায়ী, ক্রেতা পুড়াপাড়া বাজারে আসতে চাননা ফলে বেঁচাকেনায় প্রভাব পড়ছে।
চৌগাছা উপজেলা এলজিইডি অফিস বলছে রাস্তাটি সংস্কার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।