বাংলার ভোর প্রতিবেদক
সরকার পতনের পর থেকে সদরের লেবুতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলীমুজ্জামান ৫ আগস্টের পর থেকে কার্যালয়ে অনুপস্থিত। আছেন আত্মগোপন। ইউনিয়েনের নাগরিকরা সেবা থেকে বঞ্চিত। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান না থাকায় জন্ম নিবন্ধনসহ কোন সেবা না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছিল তাদের। তাই ভোগান্তি কমাতে যশোর সদর উপজেলার সমবায় কর্মকর্তাকে ইউনিয়নের প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
শুধু লেবুতলা নয়। সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগ সমর্থক চেয়ারম্যানরা উধাও হয়ে যাওয়ার পর যশোরে অনেক ইউনিয়ন পরিষদে সেবা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। মণিরামপুর উপজেলার ঝাঁপা ইউনিয়নের এক বাসিন্দা বলেন, তার এক আত্মীয়ের পাসপোর্টের জন্য জন্মনিবন্ধন সংশোধন করা লাগবে। এছাড়া জন্মনিবন্ধন, নাগরিক সনদসহ অন্যান্য জরুরি সেবা পেতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছিল। এখন প্রশাসক নিয়োগ দেয়ায় কাজটি করতে পেরেছি। ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম ও জনসেবা সচল রাখতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
সোমবার দেয়া আদেশে মণিরামপুরের ঝাপা ইউনিয়নে ঝাঁপা ইউনিয়নে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা, দুর্বাডাঙ্গার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাযহারুল আনোয়ারের স্থলে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, সদরের লেবুতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলীমুজ্জামানের স্থলে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা, ইছালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান মোছা. ফেরদৌসী ইয়াসমিনের স্থলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, উপশহর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসানুর রহমানের স্থলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এবং ফতেপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ সোহরাব হোসেনের স্থলে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এছাড়া শার্শার লক্ষণপুর ইউনিয়নের আনোয়ারা খাতুনকে সরিয়ে উপজেলা আইটি কর্মকর্তা, গোগা ইউনিয়নের তবিবর রহমানকে সরিয়ে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা, বাঁগআচড়া ইউনিয়নের আব্দুল খালেকের স্থলে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এবং উলাশী ইউনিয়নের রফিকুল ইসলামের স্থলে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এলাকায় প্রভাব বিস্তার, জমি দখল, সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়াসহ নানা অপকর্মে জড়িতের অভিযোগ থাকায় ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ওই ১০ ইউপির চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের অনেকেই অনুপস্থিত রয়েছেন।
মণিরামপুর ইউএনও নিশাত তামান্না বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে মশ্মিমনগর, ঝাঁপা ও দুর্বাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে তাদের সাথে যোগাযোগ করে পরিষদে উপস্থিত হয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে বারবার তাগিদ দেয়া হয়েছে। তারা পরিষদে হাজির হতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
ফলে তিন পরিষদে সেবা সচল রাখতে সেখানে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে ইউএনও নিশাত তামান্না বলেন, কতদিন প্রশাসকেরা পরিষদের দায়িত্বে থাকবেন সেই ব্যাপারে নির্ধারিত কিছু বলা হয়নি। এই চেয়ারম্যানদের ভাতা আপাতত বন্ধ থাকবে।