বাংলার ভোর প্রতিবেদক
নারী উদ্যোক্তা নূর শাহানা কলি কাজ করেন ‘ইনডোর প্লান্ট’ নিয়ে। নানা ধরনের ইনডোর প্লান্টের প্রদর্শনীর সাথে তিনি নিয়ে এসেছিলেন পেঁয়ারার জেলি, ড্রাগনের জেলি। আরেক উদ্যোক্তা শেখ শম্পা তৈরি করেছেন, মিক্সড ভেজিটেবল আচার, কমুড়োর বড়ি, পেঁপের বড়ি, পিঁয়াজের বড়ি! আর অন্তু তানজিলা নিয়ে এসেছেন করলার আচার, ধনিয়া-তিলের আচার!
এমন হরেক রকম ব্যতিক্রমী খাদ্য ও কৃষিপণ্যের প্রদর্শনীতে ভিন্ন এক আবহ সৃষ্টি হয় তরুণ ও নারী উদ্যোক্তাদের ‘অন দ্য জব’ প্রশিক্ষণের সমাপনী আয়োজনে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যশোর শহরের ধর্মতলা এলাকার প্রিজম এগ্রো এন্ড ফুড’ মিলনায়তনে এই সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া নারী উদ্যোক্তা নূর শাহানা কলি জানালেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ‘ইনডোর প্লান্ট’ নিয়ে কাজ করছেন। ঘরের সৌন্দর্য্য ও নান্দনিকতা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয় এই ‘ঘরের গাছ’। উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হওয়ার জন্য তিনি প্রশিক্ষণে অনেক কিছুই শিখেছেন। প্রশিক্ষণ থেকে শিক্ষা নিয়ে তিনি তৈরি করেছেন পেঁয়ারার জেলি, ড্রাগনের জেলি। এগুলোও এখন তিনি বাণিজ্যিকভিত্তিতে তৈরি করবেন; যা তার কাজকে বহুমাত্রিকতা দেবে।
আরেক উদ্যোক্তা শেখ শম্পা জানালেন, ‘কুমড়োর বড়ি আমরা সবাই চিনি জানি। এর পাশাপাশি আমি তৈরি করেছি পেঁপের বড়ি, পিঁয়াজের বড়ি! আর তৈরি করেছি মিক্সড ভেজিটেবল আচার। এগুলো খাদ্য উপাদান হিসেবে ভিন্ন মাত্রা সৃষ্টি করবে। বৈচিত্র্যময় খাবার হিসেবে মানুষ এতে আগ্রহী হবে।’
আর অন্তু তানজিলা জানালেন, সিংহভাগ বাঙালিই আচার পছন্দ করেন। আমরা সাধারণত আম, জলপাই, তেঁতুল এ ধরনের আচারে অভ্যস্ত। এই ভাবনার বাইরে এসে আমি তৈরি করেছি করলার আচার, ধনিয়া-তিলের আচার! এগুলোর স্বাদে ভিন্নতা আছে; ভিন্নতা আছে গুণে-মানেও।’ শুধু কলি, শম্পা বা অন্তুই নন; প্রত্যেক উদ্যোক্তাই এমন ভিন্নতার সমাহার নিয়ে হাজির হয়েছিলেন এই প্রদর্শনী মঞ্চে।
যশোরে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে বৃহস্পতিবার তরুণ ও নারী উদ্যোক্তাদের ১২দিনব্যাপি এই ‘অন দ্য জব’ প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ‘প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল এন্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্টারপ্রেনারশিপ এন্ড রেজিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার-ডিএএম অঙ্গ)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় প্রিজম এগ্রো এন্ড ফুড’র আয়োজনে ২৫ জন তরুণ ও নারী উদ্যোক্তা এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন।
যশোর শহরের ধর্মতলা এলাকার ‘প্রিজম এগ্রো এন্ড ফুড’ মিলনায়তনে প্রশিক্ষণের সমাপণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, জেলা সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা কিশোর কুমার সাহা। সম্মানিত অতিথি ছিলেন, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের ভিজিটিং প্রফেসর ড. সুনীল কুমার রায়। প্রিজম এগ্রো এন্ড ফুড’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুসলিমা খাতুনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন, যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজের সহকারী অধ্যাপক ইজারাদার ফজলুল হক, সাংবাদিক মিলন রহমান, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম, কৃষি বিপণন কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম, প্রশিক্ষক মানস বিশ্বাস। স্বাগত বক্তব্য দেন, প্রিজম হোটেল ম্যানেজমেন্ট স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট’র চেয়ারম্যান বশির আহমেদ চন্দন। সুলাইমান হোসেনের পরিচালনায় উদ্যোক্তদের মধ্যে থেকে অনুভূতি ব্যক্ত করেন আসাদ হোসেন, ফতেমা খাতুন প্রমুখ।
প্রিজম হোটেল ম্যানেজমেন্ট স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট’র চেয়ারম্যান বশির আহমেদ চন্দন জানান, দেশব্যাপী বিশেষ করে তরুণ ও নারীদের মধ্যে কৃষি ব্যবসায় উদ্যোক্তাদের বিকাশকে উৎসাহিত করতে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। এটি চাকরিকালীন প্রশিক্ষণ এবং ইনকিউবেশন সহায়তা প্রদানের জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে উদ্যোক্তা সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে।